পাতাল জগতে অভিনব গবেষণা – DW – 23.10.2017
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাতাল জগতে অভিনব গবেষণা

২৩ অক্টোবর ২০১৭

জার্মানির হামবুর্গ শহরে এক অভিনব বৈজ্ঞানিক উদ্যোগের মাধ্যমে ভাইরাসের কাজের ধরন ও কোষের আণবিক কাঠামোর মতো রহস্য সমাধানের আশা করছেন বিজ্ঞানীরা৷ এই গবেষণার ফলাফল নোবেল পুরস্কারও আনতে পারে৷

https://p.dw.com/p/2mKbx
ছবি: European XFEL

জার্মানির উত্তরে মাটির অনেক গভীরে রয়েছে দীর্ঘ এক সুড়ঙ্গ৷ হামবুর্গ শহরের নীচে ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার জুড়ে এই সুড়ঙ্গের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে শক্তিশালী এক্সরে লেজার রয়েছে৷ এই স্থাপনার পেছনে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের এক দলের অবদান রয়েছে৷ তাঁদেরই একজন অস্ট্রেলিয়ার এড্রিয়ান মানুস্কো৷ তিনি বলেন, ‘‘এটাই গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে উজ্জ্বল এবং সেকেন্ডে সবচেয়ে বেশি পাল্স-বিশিষ্ট এক্সরে লেজার৷ ফলে এখানে সবরকম অভিনব বৈজ্ঞানিক সুযোগ রয়েছে৷ আমার দলে ২২ জন রয়েছে৷’’

একটি পরীক্ষার আওতায় মানুস্কো ও তাঁর টিম বিশেষ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন, যেমন ভাইরাস কীভাবে কাজ করে এবং কোষের আণবিক কাঠামো কী৷ তাঁদের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আল্সহাইমারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির জন্য নতুন ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হতে পারে৷ এড্রিয়ান বলেন, ‘‘এক্সরে লেজার দিয়ে আমরা বায়োমলিকিউল দেখতে পারি, যা এর আগে কোনোভাবে সম্ভব ছিল না৷ অর্থাৎ নতুন ধরনের আরও প্রাসঙ্গিক বস্তু পর্যবেক্ষণ করাই আমাদের লক্ষ্য৷’’

এভাবে সেটা করা সম্ভব৷ প্রথম ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশে এক পার্টিকেল অ্যাক্সিলারেটর গুচ্ছ গুচ্ছ ইলেকট্রনকে প্রায় আলোর গতির সমান হাই এনার্জিতে পরিণত করে৷ সেগুলি অসংখ্য চুম্বকের মধ্য দিয়ে ধেয়ে চলে৷ চুম্বক সেগুলিকে আঁকাবাঁকা পথে চলতে বাধ্য করে৷

এই প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন লেজারের মতো বিকিরণ ঘটায়৷ কিন্তু এ সবের উপযোগিতা কী? প্রত্যেক ফ্ল্যাশ একটি ছবি সৃষ্টি করে৷ সেগুলি জোড়া দিলে একটি চলচ্চিত্র সৃষ্টি হয়৷ সেটি ব্যবহার করে অতি দ্রুত প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলিকে কম্পিউটারে থ্রিডি সিমুলেশনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা যায়৷ এ ক্ষেত্রে ফ্ল্যাশের মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রকল্পের আর এক বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান ব্রেসলার বলেন, ‘‘আগে যা সম্পূর্ণ অসম্ভব মনে হতো, এখন আমরা সেই সব পরীক্ষা করতে পারি৷’’

এই প্রক্রিয়া ন্যানো প্রযুক্তি, ফটোভল্টায়িকস ও গ্রহ নিয়ে গবেষণার কাজে আরও অগ্রগতি আনতে পারে৷ এই কেন্দ্রের জন্য কমপক্ষে ১২০ কোটি ইউরো ব্যয় হয়েছে৷ জার্মানি এর অর্ধেকের বেশি বহন করছে৷ তবে বিজ্ঞানীদের মতে, এই অর্থ ভালো কাজেই ব্যয় করা হচ্ছে৷ বিজ্ঞানী হারাল্ড সিন বলেন, ‘‘আমরা অবশ্যই নোবেল পুরস্কারের আশা করছি৷ এ বছর না হলেও কয়েক বছর পর সবকিছু আরও নিখুঁত করে তোলার পর এখানে গবেষণার অসাধারণ ফলাফল পাওয়া যাবে৷’’

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই স্থাপনায় কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে৷

ইরিস ফ্যোলনাগেল/এসবি