সাইপ্রাসে বিশ্বসংস্কৃতির শান্তির নীড় – DW – 16.10.2020
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাইপ্রাসে বিশ্বসংস্কৃতির শান্তির নীড়

১৬ অক্টোবর ২০২০

ভূমধ্যসাগরের দ্বীপ সাইপ্রাসে এক শিল্পী অভিনব এক প্রকল্প গড়ে তুলেছেন৷ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা প্রাকৃতিক উপকরণের দৌলতে সেই জগত ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে৷ নির্মাণ শৈলির প্রেরণাও সেই প্রকৃতিই৷

https://p.dw.com/p/3k0RA
Zypern Mittelmeer türkisches Bohrschiff Yavuz macht Erkundungsbohrungen
ছবি: picture-alliance/AA/Turkish National Defence Ministry

সাইপ্রাস দ্বীপে গাছপালার মাঝে যেন রঙিন এক মরুদ্যান৷ সঙ্গে শিল্পের সমারোহ৷ জায়গাটিকে যে আসলে জঞ্জালের স্তূপ হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল, তা বোঝা কঠিন৷ তার বদলে শিল্পী ও ইন্টিরিয়র ডিজাইনার হিসেবে আন্টস মিরিয়ান্টুস পুনর্ব্যবহৃত উপকরণ দিয়ে সেখানে অভিনব এক স্থাপত্য সৃষ্টি করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে শুধু সৃষ্টির তাড়না ও নিজের মনোরঞ্জনের জন্য এটা করেছিলাম৷ তারপর মানুষের চাহিদা মেনে সবার জন্য খুলে দিলাম৷''

কারণ আচমকা কৌতূহলী মানুষের ভিড় বাড়তে লাগলো৷ এমনকি অনেকে প্রাচীর টপকে ব্যক্তিগত এই স্বপ্নের জগত দেখার চেষ্টা করছিল৷ তাই এখন আগে থেকে অনুরোধ করলে ‘ইউফোরিয়া আর্ট ল্যান্ড' প্রকল্প ঘুরে দেখা সম্ভব৷ গোটা বিশ্ব ঘুরে আন্টস সেই কাজের প্রেরণা পেয়েছেন৷ সেই উদ্যোগের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মানুষ কীভাবে নিজেদের বাসায় থাকে, তাদের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি নিয়ে আমার আগ্রহ ছিল৷ যখনই কোথাও গেছি সঙ্গে নানা স্যুভেনির নিয়ে গেছি৷ এত কিছু সংগ্রহ করি বলে সব মনে নেই৷ জানতাম না একদিন সেগুলি ব্যবহার করবো৷ হ্যাঁ, আমি প্রায় সবকিছুই ব্যবহার করেছি৷''

এখনো পর্যন্ত তিনি তিনটি ভিন্ন ভবনের সমষ্টির খসড়া তৈরি করেছেন৷ প্রত্যেকটির নিজস্ব চরিত্র রয়েছে৷ কিন্তু দেখলে মনে হবে স্পেনের বিশ্ববিখ্যাত স্থপতি আন্টোনি গাউডির স্থাপত্যের স্থানীয় সংস্করণ৷ আন্টস মিরিয়ান্টুস বলেন, ‘‘আমি তাঁর দর্শন অনুসরণ করি৷ মানে আরও অরগ্যানিক আকার আনতে চাই৷ অর্থাৎ প্রকৃতির মাঝে অস্তিত্ব রয়েছে, এমন কিছু৷ সেখানে কখনো সরল রেখা বা নিখুঁত গোল আকার দেখা যায় না৷''

স্যুভেনিয়ার দিয়ে বানানো রঙিন স্থাপত্য

২০১২ সালে আন্টস নির্মাণের কিছু উপকরণ উপহার হিসেবে পান৷ সে সময়ে রাষ্ট্র হিসেবে সাইপ্রাসের দেউলিয়া হবার উপক্রম দেখা দিয়েছিল৷ ফলে অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ সেরামিক টাইলসের মতো উপকরণ ফেলে দেবার বদলে কিছু কোম্পানি আন্টসকে সেগুলি উপহার হিসেবে দিয়ে দেয়৷ প্রকল্পের শুরুতে অনেক স্বেচ্ছাসেবীও সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন৷

‘ইউফোরিয়া আর্ট ল্যান্ড'-এ এলে গোটা বিশ্বের নানা প্রান্তের চিহ্ন চোখে পড়বে৷ আন্টস জানালেন, ‘‘আফ্রিকা, বিশেষ করে ইথিওপিয়া থেকে প্রেরণা পেয়েছি, কারণ সেখানকার মানুষ পাথর, ঝিনুকসহ প্রকৃতির নানা সূত্র থেকে রং কাজে লাগায়৷ যেমন এটা ইউক্যালিপটাস গাছের কাঠ৷ গাছটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল৷ আমরা আশাপাশের পরিবেশ কাজে লাগিয়ে থিমের সঙ্গে মানানসই উপকরণ ব্যবহারের চেষ্টা করি৷ এটা আমার দাদির ছিল৷ সেখানে একই রকম কিছু দেখে এটাকে ম্যাচিং মনে হলো৷ গোটা মেঝেই প্রাকৃতিক পাথরের টুকরো ও আফ্রিকার সব মোটিফ দিয়ে তৈরি৷''

সূর্য ডুবে গেলে ইউফোরিয়া আর্ট ল্যান্ডে ভিন্ন ধরনের এক জাদুময় পরিবেশ নেমে আসে৷ আন্টস বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের মধ্যে এই মুহূর্তে মাত্র তিনটি ছোট বাড়ি রয়েছে৷ তবে ভবিষ্যতে আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতির আরও বাড়ি তৈরি করতে চাই৷''

অরগ্যানিক এই শিল্প প্রকল্পের সম্প্রসারণ ঘটে চলেছে৷

রেগিনা নিডেনজু/এসবি