মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজম, চিকিৎসা – DW – 15.05.2018
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজম, চিকিৎসা

১৫ মে ২০১৮

মাথায় রক্তের চাপ বেঁধে রক্তক্ষরণ ঘটলে রোগীর প্রাণসংশয় দেখা দেয়, তাই রোগী ও ডাক্তাররা অপারেশনের ঝুঁকি নেন: ব্রেন অপারেশন, ক্যাথিটার দিয়ে, কিংবা সরাসরি মাথায়৷ ঝুঁকি তো বটেই, আবার নিরাময় হবার পথও বটে৷

https://p.dw.com/p/2xj59
ছবি: Colourbox/I. Jacquemin

চল্লিশ বছর বয়সের আনকে কাম্প শোনালেন সে কাহিনি: ‘‘গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে রোজ আমার শরীর খারাপ হতো৷ তখন আমার একটা ভাইরাল ইনফেকশন নির্ণয় করা হয়, যা ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে সেরে যাওয়া কথা৷ সেরেও গেল – কিন্তু শরীর খারাপের ভাবটা গেল না, কাজেই আরো পরীক্ষা চলল৷ এমআরআই থেকে মাথায় একটা অ্যানিউরিজম ধরা পড়ল৷ আপাতত তারই চিকিৎসা চলেছে৷’’

মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজম মানে মগজের কোনো ধমনিতে রক্ত চাপ বেঁধে একটি জায়গা ফুলে ওঠা৷ এ ধরনের অ্যানিউরিজম প্রায়শ মাত্র কয়েক মিলিমিটার পুরু হয় ও তার কোনো উপসর্গ থাকে না৷ অ্যানিউরিজম যতক্ষণ পর্যন্ত ফেটে না যাচ্ছে, ততক্ষণ আশঙ্কার কিছু নেই৷ কিন্তু ফেটে গেলে ভয়ংকর: অর্ধেক রোগী সঙ্গে সঙ্গে কিংবা কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যান৷

ড্যুসেলডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জন প্রো. ড. ডানিয়েল হেংকি বললেন, ‘‘এ ধরনের একটি অ্যানিউরিজম ফাটবে কি ফাটবে না, তা বলার জন্য আমাদের হাতে বিশেষ পন্থা নেই৷ অ্যানিউরিজমের সাইজ, কী ধরনের অ্যানিউরিজম আর ঠিক কোথায়, এ সবের ওপর নির্ভর করবে – সেই সঙ্গে থাকবে রোগীর ব্যক্তিগত অবস্থা৷ চিকিৎসা ও চিকিৎসাজনিত জটিলতার যে ঝুঁকি, তার সঙ্গে রোগীর অবস্থাকে মিলিয়ে একটা বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তে আসতে হবে৷’’

অস্ত্রোপচার

মাথায় রক্তক্ষরণের বিপদ শুধুমাত্র অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব৷ একটি পন্থা হল পেশেন্টের কুঁচকি দিয়ে ক্যাথিটার ঢুকিয়ে মগজের সংশ্লিষ্ট ধমনি পর্যন্ত চলে যাওয়া৷

ওই ক্যাথিটার দিয়েই অ্যানিউরিজমে প্ল্যাটিনামের অতি সূক্ষ্ম প্যাঁচানো তার ঢোকানো হয়, যার ফলে ফোলা জায়গাটাতে আর কোনো রক্ত ঢুকতে পারে না৷ অ্যানিউরিজমটিকে মস্তিষ্কের রক্তচলাচল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়, তার ভেতরের রক্তও আর জমাট থাকে না, বরং তরল হয়ে আসে৷ 

অন্য উপায়টি হল সরাসরি মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার৷ সেজন্য সবচেয়ে কাছ দিয়ে অ্যানিউরিজম অবধি পৌঁছানো দরকার৷ অতি সাবধানে কাজ করতে হয় – অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অ্যানিউরিজমটায় টাইটানের তৈরি ক্লিপ লাগাতে হয়৷

চাপ বাঁধা জায়গাটার ঠিক তলায় ক্লিপ বসিয়ে ফোলা জায়গাটাতে আর যাতে রক্ত না ঢোকে, তার ব্যবস্থা করা হয় – কাজেই ফেটে যাওয়ার আর কোনো ভয় থাকে না৷ চিকিৎসকদের কাছে এ সবই নিত্যনৈমিত্তিক কাজ হলেও – ঝুঁকিটা কম নয়৷

প্রফেসর হেংকি বললেন, ‘‘মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার বা ক্যাথিটার ঢুকিয়ে অস্ত্রোপচার, দু'টোই ব্রেনের ওপর সরাসরি অপারেশন, যা থেকে জটিলতা ঘটার ঝুঁকি থেকে যায়৷ কাজেই আমাদের এমন একটা পদ্ধতি দরকার, যা আমাদের বলে দেবে, কোন অ্যানিউরিজমটা ফাটতে পারে আর কোন অ্যানিউরিজমটার ফাটার সম্ভাবনা কম৷’’

সব ঝুঁকি সত্ত্বেও আনকে কাম্প অপারেশনের পথটাই বেছে নেন৷ অপারেশনে কাজ হয়েছে৷ আনকে কাম্প আজ পুরোপুরি সুস্থ৷

সিলভিও ভেনৎসেল/এসি