বিশ্বজুড়ে শরণার্থীর স্রোত, উদ্বাস্তুর সুনামি – DW – 28.07.2011
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বজুড়ে শরণার্থীর স্রোত, উদ্বাস্তুর সুনামি

২৮ জুলাই ২০১১

চার কোটি মানুষ পালাচ্ছে গৃহযুদ্ধ, সহিংসতা, ক্ষুধার হাত থেকে৷ তাদের অধিকাংশ স্বদেশেই আটক৷ মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বিদেশে আশ্রয় পাচ্ছে৷ এই হল ইউএনএইচসিআর'এর রিপোর্ট৷

https://p.dw.com/p/12593
কেনিয়ার দাদাব শরণার্থী শিবিরে সোমালিয়ার উদ্বাস্তুদের ভিড়ছবি: Picture-Alliance/dpa

১৯৫১ সালের ২৮শে জুলাই৷ এদিন জাতিসংঘে অনুমোদিত হয় উদ্বাস্তুদের মর্যাদা সংক্রান্ত জেনেভা চুক্তি৷ তা'তে উদ্বাস্তুর সংজ্ঞা দেওয়া ছিল, এছাড়া কারা রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে পারে এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেবার দায়িত্ব কিভাবে অন্যান্য দেশের উপর বর্তায়৷ জেনেভা চুক্তি গোড়ায় সৃষ্টি হয়েছিল যুদ্ধপরবর্তী ইউরোপের উদ্বাস্তু-শরণার্থীদের জন্য৷ পরে ১৯৬৭ সালে তা সারা বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য হয়৷

Flash-Galerie 60 Jahre Genfer Flüchtlingskonvention
টিউনিশিয়ায় জাতিসংঘের শিবিরে লিবীয় শরণার্থীদের ভিড়ছবি: picture-alliance/dpa

ষাট বছর কেটে গেছে৷ আজ সারা বিশ্বে উদ্বাস্তুর সংখ্যা চার কোটি ৩০ লক্ষের বেশি, যা কিনা গত ১৫ বছরে সর্বোচ্চ৷ সংকটের কোনো অভাব নেই, কাজেই উদ্বাস্তুরও কোনো অভাব নেই৷ সবার আগেই আসছে আফগানিস্তান৷ এবং দেশ ছেড়ে পলাতক মোট ৩০ লাখ আফগানদের কেউই স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার অভিপ্রায় রাখেন না৷ দ্বিতীয় স্থানে ইরাক৷ প্রায় ১৭ লাখ ইরাকি আজ দেশছাড়া৷ তারাও স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে নারাজ৷ তৃতীয় স্থানে সোমালিয়া৷ প্রায় আট লাখ সোমালির আজ ফেরার মতো কোনো দেশ নেই বললেই চলে৷ সেই সঙ্গে চলতি খরা, যা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ছায়া ফেলেছে গোটা হর্ন অফ আফ্রিকার উপর৷

এ'সবই আছে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু ত্রাণ সংস্থা ইউএনএইচসিআর'এর ২০১০ সালের বাৎসরিক বিবরণে৷ তা'তে এ'ও আছে যে, উদ্বাস্তুদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের সংখ্যা গত বিশ বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে৷ তার একটা কারণ এই যে, বিশ্বে স্থায়ী সংঘাতগুলোর সঙ্গে আইভরি কোস্ট, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো নতুন সংঘাত যুক্ত হয়েছে৷ ‘‘অথচ পুরনো সংঘাতগুলোর সমাধান হয়নি,'' বলেছেন জাতিসংঘের উদ্বাস্তু হাই কমিশনার আন্তোনিও গুতেরেজ৷

Infografik Flüchtlingsströme 2010 Englisch
২০১০ সালে বিশ্বজুড়ে শরণার্থী পরিস্থিতির একটা চালচিত্র

দ্বিতীয়ত, বিশ্বের পাঁচজন উদ্বাস্তুর মধ্যে চারজনেরই বাস তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশে৷ যেমন বিশ্বের যে দেশটিতে আজ সবচেয়ে বেশি উদ্বাস্তুর বাস, তার নাম পাকিস্তান৷ পাকিস্তান প্রায় বিশ লাখ উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়েছে, যদিও পাকিস্তানের নিজের সমস্যার কোনো অভাব নেই৷ প্রধানত এই উদ্বাস্তুরা এসেছে আফগানিস্তান থেকে, এবং বছরের পর বছর তারা উদ্বাস্তু শিবিরে বাস করে চলেছে৷ তারা কোনোদিন স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারবে কিনা, তা'ও তাদের জানা নেই৷

আফ্রিকা মহাদেশে এরকম একটি দৃষ্টান্ত হল কেনিয়া৷ প্রতিবেশী দেশগুলির মানুষদের জন্য কেনিয়া বারংবার তার সীমান্ত খুলে দিয়েছে৷ হর্ন অফ আফ্রিকায় দুর্ভিক্ষের অর্থ উত্তর কেনিয়ার ইতিমধ্যেই উপছে পড়া উদ্বাস্তু শিবিরগুলিতে প্রতিদিন এক হাজার থেকে দু'হাজার ক্ষুধিত, অসহায় মানুষ এসে পৌঁছচ্ছে সোমালিয়া আর ইথিওপিয়া থেকে৷ কেনিয়ার অভ্যন্তরেও মানুষ পালাচ্ছে খরার বিভীষিকা থেকে৷

এই আইডিপি বা ইন্টারন্যালি ডিসপ্লেস্ড পার্সনস অর্থাৎ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু মানুষদের পরিস্থিতি কিছুটা আশাজনক বলে ইউএনএইচসিআর'এর বিবরণে প্রকাশ৷ বিশ্ব জুড়ে দু'কোটি পঁচাত্তর লক্ষ আইডিপি'র মধ্যে প্রায় ত্রিশ লক্ষ তাদের স্বগ্রামে ফিরে আবার কাজকর্ম শুরু করতে পেরেছে - এটা হল ২০১০ সালের পরিসংখ্যান৷ পাকিস্তান, কঙ্গো, উগান্ডা কিংবা কিরঘিজিয়া, সর্বত্রই এ'ধরনের ঘটনা ঘটছে৷ অন্যদিকে আইডিপি'দের মোট সংখ্যা বিগত দশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে৷

অথচ এই সামগ্রিক পরিস্থিতিতে ধনী দেশগুলি তাদের সীমান্ত আরো নিশ্ছিদ্র করে তুলছে, বলে অভিযোগ করেছেন ইউএনএইচসিআর প্রধান আন্তোনিও গুতেরেজ৷

প্রতিবেদন: হেলে ইয়েপেসেন/অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য