বিদায় স্পেস শাটল, স্বাগতম ওরিয়ন – DW – 17.05.2010
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদায় স্পেস শাটল, স্বাগতম ওরিয়ন

১৭ মে ২০১০

মার্কিন মহাকাশফেরি কর্মসূচি চলতি বছরেই চিরকালের মতো শেষ হতে চলেছে৷ লম্বা বিরতির পর তার জায়গায় আসতে চলেছে নতুন প্রজন্মের মহাকাশযান – ওরিয়ন৷

https://p.dw.com/p/NPi5
অ্যাটলান্টিস’এর শেষ যাত্রাছবি: Picture alliance/dpa

মহাকাশ যাত্রার জন্য এখনো পর্যন্ত যে তিনটি স্পেস শাটল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই তিনটি হল অ্যাটলান্টিস, এন্ডেভার এবং ডিসকাভারি৷ কিন্তু তাদের আয়ু শেষ হওয়ার মুখে৷

অ্যাটলান্টিস'এর অন্তিম যাত্রা

চলতি সপ্তাহান্তে অ্যাটলান্টিস'এর শেষ অভিযান শুরু হয়েছে৷ ১২ দিনের এই অভিযানের গন্তব্য আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন৷ এই ঐতিহাসিক যাত্রায় সামিল হয়েছেন ৫ মার্কিন ও ১ ব্রিটিশ মহাকাশচারী৷ রাশিয়ায় তৈরি এক গবেষণাগার মডিউল সহ আরও কিছু সরঞ্জাম স্পেস স্টেশনে রেখে আসছে অ্যাটলান্টিস৷ শেষ অভিযানের আগে কমান্ডার কেন হ্যাম মনে করিয়ে দিয়েছেন অ্যাটলান্টিস'এর অবদানের কথা৷ এই যানই প্রথম রাশিয়ার সোইয়ুজ মহাকাশযানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল৷ ম্যাগেলান ও গ্যালিলিও'র মত অভিযানও শুরু হয়েছে অ্যাটলান্টিস'এরই হাত ধরে৷

Flash-Galerie Space Shuttle Endeavour Landung
এন্ডেভার’এর আয়ুও শেষ হওয়ার মুখেছবি: AP

এন্ডেভার ও ডিসকভারি'র শেষ যাত্রা

নভেম্বর মাসে এন্ডেভার'এর শেষ যাত্রার পরিকল্পনা রয়েছে৷ প্রথমে ২৯শে জুলাই উৎক্ষেপণের দিন স্থির করা হয়েছিল৷ তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের আগে কিছুতেই অভিযান শুরু করা সম্ভব নয়৷ কারণ এই অভিযানে এমন একটি মডিউল পাঠানোর কথা রয়েছে, যার আলফা ম্যাগনেটিক স্পেকট্রোমিটার প্রোগ্রাম'এর চুম্বকটিকে বিজ্ঞানীরা বদলাতে চান৷ তবে তার জন্য কিছুটা সময় লাগবে৷ ডিসকভারি'র শেষ যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ১৬ই সেপ্টেম্বর৷ শেষ তিনটি মহাকাশফেরির শেষ ৩টি অভিযান শেষ হলে সব মহাকাশফেরির মোট অভিযানের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৩৪৷

Space Shuttle
ডিসকভারি’র শেষ অভিযান সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হওয়ার কথাছবি: AP

ভরসা সোইয়ুজ

শাটল যুগের অবসানের পর আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে যাতায়াত করার জন্য রাশিয়ার সোইয়ুজ মহাকাশযানের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বাকি দেশগুলির মহাকাশচারীদের নির্ভরতা অনেক বেড়ে যাবে৷ ঐ যান আকারে অনেক ছোট৷ মাত্র ৩ জন মহাকাশচারী বহন করতে পারে সোইয়ুজ৷ বেশি মালপত্র নেওয়ারও উপায় নেই এই যানে৷ তা সত্ত্বেও বহু বছর ধরে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য বাহন হিসেবে কাজ করে চলেছে রাশিয়ার সোইয়ুজ৷

Flash-Galerie Raumfahrt Sojus Kapsel
সোইয়ুজ’ই নির্ভরযোগ্য বাহন হিসেবে থেকে গেছেছবি: AP

আশার আলো ‘ওরিয়ন'

স্পেস শাটল'এর বিকল্প হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে ওরিয়ন নামের এক মহাকাশযানকে৷ প্রচলিত অর্থে ঠিক মহাকাশফেরি বলা যাবে না এই যানকে৷ কারণ রকেটের মাধ্যমেই উৎক্ষেপণ করা হবে ওরিয়ন'কে৷ রাশিয়ার উপর নির্ভরতা কমাতে ওরিয়ন'কে প্রস্তুত করে তোলার কাজ চলছে৷

২০০৩ সালে মহাকাশফেরি কলম্বিয়া'র ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কল্পনা চাওলা সহ বাকি আরোহীরা৷ এমন দুর্ঘটনা এড়াতে বা দুর্ঘটনা ঘটলে মহাকাশচারীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা যাতে হুমকির মুখে না পড়ে, সেই বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে৷ ইতিমধ্যেই ওরিয়নকে ঘিরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে৷ যেমন মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নিউ মেক্সিকো মরুভূমির এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরীক্ষা চালিয়ে দেখা হয়েছে, জরুরি বা আপদকালীন অবস্থায় মহাকাশযানের আরোহীদের কীভাবে নিরাপদে উদ্ধার করা যায়৷ সুখের কথা, পরীক্ষার সময় আরোহীদের মডিউলটি পর্যায়ক্রমে ৩টি রকেটের সাহায্যে উল্কার বেগে প্রায় ১.৯ কিলোমিটার উচ্চতায় পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷ প্রথম রকেটটি মাত্র ৩ সেকেন্ডের মধ্যে ঘণ্টায় ৭২০ কিলোমিটার গতিতে মডিউলটিকে বিচ্ছিন্ন করতে পেরেছে৷ দ্বিতীয় রকেটটি মডিউলটিকে সঠিক পথে চালিত করেছে এবং এরপর তৃতীয় রকেটটি নির্ধারিত খাঁচা থেকে মডিউলকে বিচ্ছিন্ন করে প্যারাশুটের মাধ্যমে ঝুলন্ত অবস্থায় পৃথিবীর বুকে ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে৷

Raumschiff Orion rettet die NASA
ওরিয়ন’র জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবেছবি: AP

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা'র এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, এর আগে কোনো মহাকাশযানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় নি৷ নাসা ভবিষ্যতের যে কোনো মহাকাশ অভিযানকে যতটা সম্ভব নিরাপদ করে তুলতে চায়৷

আসলে ওরিয়ন মহাকাশযানকে স্পেস শাটল'এর চেয়েও অনেক বড় অভিযানে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল নাসার৷ চাঁদে আবার মানুষ পাঠাতে ওরিয়ন'কে ব্যবহার করার কথা ছিল৷ কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা অর্থাভাবের কারণে ফেব্রুয়ারি মাসে ঐ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক