বিজেপির ঘটনাবহুল পশ্চিমবঙ্গ বনধ

কলকাতার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে বিজেপি অফিসের কাছে ব্যারিকেড করে রেখেছিল পুলিশ। বনধ সফল করতে রাস্তায় নেমে বিজেপি কর্মীরা সেই ব্যারিকেড সরিয়ে দেয়। তারপর পুলিশ প্রচুর বিজেপি কর্মীকে আটক করে।

উত্তর কলকাতায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলো শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়। সেখানে রাস্তা অবরোধ শুরু করে বিজেপি। বাস, গাড়ি আটকে দেয়ার চেষ্টা হয়। এটা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের ঝামেলা হয়।

শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে যান সাবেক সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া ছিলেন সাবেক রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। সঙ্গে ছিলেন বেশ কিছু বিজেপি কর্মী। তারা সেখানে বনধ সফল করার চেষ্টা করতে থাকেন। নেতাজি মূর্তির কাছে বিজেপি কর্মীরা সমবেত হন।

পুলিশ এরপর লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপি কর্মীদের আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশ এদিন বনধ ব্যর্থ করার জন্য খুবই তৎপর ছিল। বিজেপি কর্মীরা যাতে রাস্তা অবরোধ না করতে পারে, সেদিকে তাদের নজর ছিল। ফলে বিজেপি কর্মীরা রাস্তা অবরোধ করলেই তারা তাদের আটক করে বা সরিয়ে দেয়।

কলকাতার অনেক জায়গায় বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় বসে পড়ে। তারা রাস্তা অবরোধ চালিয়ে যেতে চায়। তখন পুলিশ তাদের চ্যাংদোলা করে সরিয়ে নিয়ে যায়। তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

শিয়ালদহের কোলে মার্কেটে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ তার কর্মীদের নিয়ে দোকান বন্ধ রাখার অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। তখন তৃণমূল কর্মীরা তাকে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। তৃণমূল কর্মীরা বলতে থাকে, এটা কী ধরনের আন্দোলন? ওরা কী করে ওষুধ-সহ সব দোকান বন্ধ করে দিতে বলছে। ঝামেলার পর সজল ঘোষ বাড়ি ফেরেন। পরে পুলিশ সজল ঘোষকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে যায়।

বিজেপি কর্মীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করে সেখানে বাস, গাড়ি আটকে দিতে চায়। কিন্তু কোথাও পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। কোথাও তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে তাদের ঝামেলা হয়। দুপুরে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় দলের নেতারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় রেললাইন অবরোধ করে বিজেপি কর্মীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কিছু জায়গায় রেলের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে দেয়া হয়। ফলে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় অনেকক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। সকালে শিয়ালদহ স্টেশনের ব্যস্ততার ছবি ছিল না।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, তারা এবার একসঙ্গে নবান্ন, লালবাজার ও কালীঘাট অভিযানের ডাক দেবেন। তবে কবে এই অভিযান হবে তা তিনি জানাননি। শুভেন্দু বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে এই অভিযান হবে।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, ''নারীদের উপর অত্যাচার অনেক হয়েছে। আর বরদাস্ত নয়। কোনো সভ্য সমাজ মা-বোনদের উপর নির্যাতন মেনে নিতে পারে না। ছাত্রছাত্রী, চিকিৎসকরা রাস্তায়, কিন্তু অপরাধীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। নির্ভয়াকাণ্ডের ১২ বছর কেটে গেলেও ধর্ষণ ঘটে চলেছে।'' রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, আরজি কর কাণ্ডে তিনি হতাশ ও আতঙ্কিত।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের নেতারা এদিন মেয়ো রোডে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে চিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে হুমকির সুরে বলেন, ''আমি বলেছিলাম, বদলা নয়, বদল চাই। আজ বলছি ফোঁস তো করতে পারবেন। যেটা করার দরকার সেটা আপনারা ভালো বুঝে করবেন।'' জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার কথা বলে মমতা জানিয়েছেন, ''কারো বিরুদ্ধে এঅফআইআর করলে তার ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে। আমি চাই না কারো ভবিষ্যৎ নষ্ট হোক।''