পড়াশোনাকে সহজ করেছে ইন্টারনেট – DW – 11.04.2011
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পড়াশোনাকে সহজ করেছে ইন্টারনেট

১১ এপ্রিল ২০১১

দশ বছর আগেও পড়াশোনা এবং বই খোঁজাখুঁজি করতে যেতে হতো লাইব্রেরিতে৷ কারণ সেখানেই সবকিছু পাওয়া যেত৷ ইদানিং দিন পাল্টেছে৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি হয়েছে অনেক বেশি সহজ৷

https://p.dw.com/p/10r9U
এখন এভাবে বইয়ে মাথা গুঁজে পড়তে দেখা যায় কমছবি: Universität Bonn

ইন্টারনেটের যুগে শুধু বই খোঁজা নয়, ডিগ্রীও হাতে চলে আসছে সহজে৷ পড়াশোনাকে অনেক সহজ করে দিয়েছে ইন্টারনেট৷ প্রকাশ্যে কেউ সেকথা স্বীকার করে না৷ কিন্তু সেই স্বীকারোক্তিই ঢেঁড়া পিটিয়ে ঘোষণা করা হল জার্মানির শিক্ষা বিষয়ক মেলা – বিল্ডুংস-মেসে'তে৷ গত কয়েক বছরে ই-লার্নিং গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কতটা প্রভাবিত করেছে তাই তুলে ধরা হয়েছে এই মেলাতে৷ এর আরেক অর্থ হল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনাও ইদানিং নির্ভর করছে ইন্টারনেট বা ই-লার্নিং'এর ওপর৷ ক্লাস মিস হয়েছে ? কোন সমস্যা নেই – পুরো লেকচারের টপিকটি ইমেল করে পাঠিয়ে দেয়া হবে৷ ক্যাম্পাসের জীবনকে আরো সহজ করতে তৈরি করা হয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, মুডল অথবা ই-ক্যাম্পাস৷ বাজারে এসেছে ইলেকট্রনিক বই৷ লাইব্রেরি কখন খুলবে বা বন্ধ হবে তা মনে রাখার বা জানার প্রয়োজন নেই – কারণ পুরো বইটাই পড়া যাচ্ছে ইন্টারনেটে৷

Internet Computer Laptop Arbeit Zeitung Kaffee Internetcafé
ইন্টারনেটের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছেছবি: fotolia/Dash

ইন্টারনেট ছাড়া পড়াশোনা অসম্ভব!

জুলিয়া বললেন, ‘‘ইন্টারনেট ছাড়া আমার পড়াশোনা খুবই কঠিন হত৷ ঠিকমত চলতোই না৷ সেমেস্টার শুরুতে প্রতিদিনই আমাকে ক্লাসের রুটিন ইন্টারনেটে বসে চেক করতে হত৷ আর পুরো সেমেস্টারে শিক্ষকরা তাঁদের লেকচার ই-ক্যাম্পাসের ইনট্রানেটে তুলে দিতেন৷ এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম৷ আসল কথা হল সবকিছুই চলছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে৷''

জুলিয়া বন বিশ্ববিদ্যালয়ে খাদ্য ও পরিপুষ্টি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছে৷ ইন্টারনেট ছাড়া জীবন কীভাবে সচল থাকতে পারে তা জুলিয়া ভাবতে পারে না৷ তাঁর শিক্ষার্থী জীবনের বেশিরভাগই কাটছে মাউসের ক্লিকে৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ও ইন্টারনেটের সাহায্যে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা আরো সহজ করে দেয়ার চেষ্টা করছে৷ লেকচার শুনতে সবাই শুধু ক্লাসেই মিলিত হয় না, তারা মিলিত হয় ই-ক্যাম্পাসে৷ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে যে কোন ছাত্র-ছাত্রীই ই-ক্যাম্পাসে আসতে পারে৷ সেখানে চ্যাট হয়, লেকচার এবং নোটেরও আদান-প্রদান হয়৷ এই কাজগুলো কুড়ি বছর আগেও কল্পনা করা যেত না৷

২০ বছর আগে ইন্টারনেট ব্যবহারে অনাগ্রহ

হারাল্ড জাইৎজ ১৯৯০ সালে বন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন৷ পড়াশোনা করেছেন খাদ্য ও পরিপুষ্টি বিষয় নিয়ে৷ হারাল্ড ফিরে গেলেন পুরনো দিনে, ‘‘আমরা সেই সময় খুব আনন্দ পেয়েছিলাম যখন বিশ্ববিদ্যালয় জানাল যে, সবার ইমেল অ্যাড্রেস থাকবে৷ ইমেলের মাধ্যমে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে৷ তখন সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন থেকে চারটি ইন্টারনেটে প্ল্যাটফর্ম ছিল৷ সেখান থেকে আমরা ইমেল অ্যাড্রেস যোগাড় করেছি৷ তখন নামগুলোও ছিল স্টার-ওয়ার্স'এর কোডের মত৷ আমার ইমেল অ্যাড্রেসের শুরুতে ছিল ‘ইউ জেড আর সিক্স এইচ' এরপর নাম এবং আরো কিছু সংখ্যা৷ তখন মাত্র পাঁচ বা দশ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী ইন্টারনেটে আগ্রহ দেখিয়েছিল৷''

Schule und Bildung
এরপরও বই ছাড়া কিন্তু অনেকের চলেই নাছবি: Fotolia/Paulus Rusyanto

অথচ আজ ইন্টারনেট অ্যাড্রেস ছাড়া কোন কিছুই কল্পনা করা যায় না৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি থেকে শুরু করে, সেমিনারে যাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আসা, লাইব্রেরি থেকে বই নেয়া – সবকিছুই হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে৷ গত বছর প্রায় অনলাইন ক্যাটালগ প্রসঙ্গে চল্লিশ লক্ষ প্রশ্নোত্তর পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি৷ এর আগে বই খোঁজা হতো হাতে রিকুইজিশন স্লিপ লিখে৷ অনেক সময় ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের অপেক্ষা করতে হত কাঙ্খিত বইটি হাতে পাওয়ার জন্য৷ ক্লেয়ার পেটিফুর্ট বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে কাজ করছেন৷ তিনি বইয়ের পুরনো ডাটা নতুন অনলাইন ক্যাটালগে তুলছেন৷ ক্ল্যায়ার জানান, ‘‘আগে ছাত্র-ছাত্রীরা যে লেখকের বই খুঁজতো তার নাম লিখতে হত৷ তখন সেই লেখকের সব বই কম্পিউটারের স্ক্রিনে চলে আসতো৷ তখন আরো সুক্ষ্মভাবে বইয়ের নামটি খুঁজে বের করতে হতো৷ অথচ এখন কত সহজ হয়ে গেছে৷''

চলছে ইন্টারনেট ছাড়াও

তবে সব বিষয়ই যে ইন্টারনেটের নখদর্পণে চলে এসেছে তা নয়৷ ক্যারোলিন পড়াশোনা করছে জার্মান স্টাডিজ বা জার্মান ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে৷ জুলিয়া বাড়িতে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে সব তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হচ্ছে ক্যারোলিনের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না৷ ভাষা, সংস্কৃতি সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে ইন্টারনেটের প্রভাব এখনো তেমনভাবে পড়েনি৷

ক্যারোলিনের কী তাহলে ইন্টারনেটের প্রয়োজন নেই ? ক্যারোলিন জানালেন, ‘‘আমি টেলিভিশনের ভক্ত নই, টেলিভিশন ছাড়াই বড় হয়েছি৷ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর প্রথম তিন মাস ইন্টারনেটের সঙ্গে কোন সম্পর্ক ছিল না৷ সময় ভালই কেটেছে৷ ইন্টারনেট নিয়ে খুব বেশি চিন্তা-ভাবনাও করতাম না৷ সাধারণত দেখা যায় যাদের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে তারা সারাক্ষণই অনলাইনে বসে রয়েছে৷ ইন্টারনেট ছাড়াও যে চলাফেরা সম্ভব তা বোঝানো কঠিন৷ তবে ইন্টারনেট থাকলে কিছু সুবিধা তো আছেই৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান