নবান্ন থেকে ফিরে কীভাবে প্রতিবাদ করে রাত কাটালেন জুনিয়র ডাক্তাররা

দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তারা দাঁড়িয়ে ছিলেন নবান্ন সভাঘরের সামনে। ঢোকার জন্য নাম লিখে সই করেছিলেন। কিন্তু সরকার বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি না মানায় তারা আর ভিতরে ঢোকেননি। বাইরে অপেক্ষা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে চলে যাওয়ার পর তারা আবার বিধাননগরে স্বাস্থ্যভবনের সামনে প্রতিবাদের জায়গায় ফিরলেন।

বিক্ষোভস্থলে ফিরে এসে সাংবাদিকদের কাছে জুনিয়র ডাক্তাররা বললেন, ''আমরা ৩৩ দিন ধরে আন্দোলন করছি। দরকার হলে আরো ৩৩ দিন রাস্তায় থেকে আন্দোলন করব। আমরা চেয়ার চাই না। বিচার চাই।''

জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ''আমরা মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের উপর ভরসা রেখেই নবান্ন গেছিলাম। আমরা বিচার চাই। আমরা চাই, এরকম ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না হয় তার নিশ্চয়তা। আমরা চাই, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, যারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন, তাদের শাস্তি দিতে হবে।''

তারপর রাতজুড়ে চললো প্রতিবাদ। গান হয়ে উঠলো সেই প্রতিবাদের হাতিয়ার। একটা গান শেষ হচ্ছে, তারপর শুরু হচ্ছে আরেকটা গান। এই গান উজ্জীবীত করে, এই গান মন-প্রাণকে চাঙ্গা রাখে। এই গান অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শেখায় বলে মনে করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

কখনো আবার নাটক করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। পথনাটক। রঙ্গব্যাঙ্গের হুল থাকে সেই নাটকে। সেই নাটকে তৈরি হয় প্রতিবাদের ভাষা। এ সবই প্রতিবাদকারীদের বিক্ষোভে বাড়তি প্রেরণা জোগায় বলে তারা জানিয়েছেন।

কখনো আবার ডাকের তালে গানের সঙ্গে শুরু হয় নাচ। সাধারণ নাচ নয়। প্রতিবাদের নাচ। অন্যায়, অবিচার ঝেঁটিয়ে বিদায় করার জন্য নাচ। নিজেদের শপথ মেনে চলার জন্য নাচ।

এভাবেই প্রতিবাদ চলতে থাকে। কেউ ডাফলি বাজান। কেউ গিটার। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করা জুনিয়র ডাক্তাররা অপেক্ষা করতে থাকেন, রাত ভোর হয়ে সূর্য ওঠার জন্য, তাদের ন্যায় পাওয়ার প্রহরের জন্য।

সিনিয়র ডাক্তারদের অনেকে প্রতিবাদে এসে জানিয়ে দিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ না দিলেও শাস্তি দেয়া যাবে না। যদি দেয়া হয় তাহলে তারাও প্রতিবাদে নামবেন। জুনিয়র ডাক্তারদের সর্বভারতীয় সংগঠনগুলি জানিয়ে দিয়েছে, কাউকে শাস্তি দেয়া হলে, তারা আবার আন্দোলনের রাস্তায় যাবে।