তৃতীয় লিঙ্গের সম্পত্তির উত্তরাধিকার – DW – 18.11.2020
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তৃতীয় লিঙ্গের সম্পত্তির উত্তরাধিকার

১৮ নভেম্বর ২০২০

পরিবারের উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার পাচ্ছেন বাংলাদেশের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা৷ দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার হয়ে আসা বাংলাদেশের তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের এই অধিকার মিলছে শিগগিরই৷

https://p.dw.com/p/3lVC2
বাংলাদেশের তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS.com/Z. Hasnain Chowdhury

প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ হলেও উত্তরাধিকার নিয়ন্ত্রণ হয়ে আসছে ধর্মীয় আইন অনুসারেই৷ ফলে বাবা-মা মারা গেলে এতদিন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা বঞ্চিতই হয়ে আসছিলেন৷

কয়েক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নতুন উত্তরাধিকার আইনের কথা জানান৷ পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে কাজ করার কথা জানায়৷

বার্তাসংস্থা এএফপিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, ‘‘আমরা ইসলামিক শরিয়া আইন এবং আমাদের সংবিধান অনুসারে একটি আইন প্রণয়নের চেষ্টা করছি৷ এর ফলে কোনো পরিবারের তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যের সম্পত্তির অধিকারও নিশ্চিত হবে৷’’

এখনও এই বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়নি, তবে একবার উত্থাপিত হলে তা সহজেই পাস হয়ে আইনে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিতে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ৷ ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পুরুষ এবং নারীর বাইরে আলাদা লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়৷ গত বছর থেকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ভোটার তালিকাতেও নাম লেখাতে পারছেন তারা৷ এ মাসের শুরুতেই দেশটিতে বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের একটি মাদ্রাসাও চালু হয়েছে৷

বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য প্রথম মাদ্রাসা চালু

তবে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অনেকেই এখনও বৈষম্যের শিকার৷ সমকামিতা এখনও দেশটিতে দণ্ডণীয় অপরাধ৷ তবে ঔপনিবেশিক আমলের এই আইনের প্রয়োগে দেশটিতে এতটা কড়াকড়ি নেই৷

নতুন উত্তরাধিকার আইনের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও এর বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে সন্দিহান তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার কর্মীরা৷ অনেক পরিবারই এখনও তৃতীয় লিঙ্গের সন্তানকে সন্তান বলেই মেনে নিতে চায় না৷

তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন সাদাকালো এর প্রধান অনন্যা বণিক জানান, ‘‘একজন অধিকারকর্মী হিসেবে এই ইস্যুটি আলোচনায় আসায় আমি আনন্দিত৷ কিন্তু এটা কেবল আইনের বিষয় না, পুরো সমাজের পরিবর্তন প্রয়োজন৷’’

১৬ বছর বয়সে নিজেকে তৃতীয় লিঙ্গের বলে বুঝতে পারেন অনন্যা৷ ‘‘আমি যত বড় হচ্ছিলাম ততই অন্য সব পরিবার থেকে চাপ আসছিল৷ ফলে একসময় আমাকে আমার পরিবার ছেড়ে দিতে হয়৷ আমি একা নয়, আমাদের সম্প্রদায়ের এমন হাজার হাজার সদস্যকে নিজের পরিবার ছেড়ে আসতে হয়েছে৷’’

তিনি বলেন, অনেকের ছোটবেলাতেই নিজেদের পরিবার ছেড়ে আসতে বাধ্য হন৷ ফলে উত্তরাধিকার আদায় করতে গেলে তাদের সহিংসতার শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷

এলজিবিটিকিউ অধিকারকর্মীরা ধর্মীয় কট্টরপন্থিদের কাছ থেকেও নানা হুমকি-হামলার শিকার হন৷ ২০১৫ সালে এলজিবিটিকিউ ম্যাগাজিন রূপবানের সম্পাদক এবং সমকামী অধিকার কর্মী জুলহাস মান্নানকে কুপিয়ে হত্যাকরে উগ্রবাদীরা৷ এরপর অনেক সমকামী অধিকার কর্মীই বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন৷

এডিকে/কেএম (এএফপি)

গতবছরের মার্চের ছবিঘরটি দেখুন...