তৃণমূলের অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করেছে আওয়ামী লীগ – DW – 26.10.2019
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তৃণমূলের অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করেছে আওয়ামী লীগ

হারুন উর রশীদ স্বপন স্বপন
২৬ অক্টোবর ২০১৯

তৃণমূল পর্যায়ে দলের বহিরাগত ও দুর্নীতিবাজদের তালিকা করেছে আওয়ামী লীগ৷ তাদেরকে আগামী কমিটিতে রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন নেতারা৷ তবে তৃণমূলের চেয়ে শীর্ষ পর্যায়েই দুর্নীতিবাজ বেশি বলে অভিযোগ তাদের৷

https://p.dw.com/p/3RzIg
Bangladesch Wahlen Wahlkampf 2018 Awami Muslim League
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে এখন দুর্নীতিবাজ ও অনুপ্রবেশকারীদের বিদায় করার প্রক্রিয়া চলছে৷ কাউন্সিলের মাধ্যমে যেসব নতুন কমিটি হবে সেখানে তাদের জায়গা হবেনা বলে শোনা যাচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার এই মনোভাবে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগের তৃনমূলের নেতা-কর্মীরা৷

সম্প্রতি যুবলীগের চেয়ারম্যানওমর ফারুক চৌধুরীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ক্যাসিনো কাণ্ডের কারণে৷ একই কারণে বিদায় করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসারকে৷ সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকে কউন্সিলের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে৷ তারও আগে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিদায় করা হয়েছে ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীকে৷ এখন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের সংস্কার চান৷ তাদের অভিযোগ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনে অনেক বহিরাগত রয়েছে৷

দেশের দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল কেন্দ্র থেকে৷ আমরা তা পঠিয়ে দিয়েছি৷ আর দুর্নীতিবাজ কারা তা সবাই জানে৷ তাদের তালিকা করছে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ আমরা এবার এদের কাউকেই আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের কোনো কমিটিতে ঠাঁই দেব না৷''

মতিউর রহমান

তিনি জানান, ‘‘আমাদের এখানে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কমিটিতে বহিরাগত বেশি৷ এমনকি শিবিরের ছেলেরাও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃত্বে চলে এসেছে৷ আওয়ামী লীগেও বিএনপির লোকজন ঢুকেছে৷ উপজেলা কমিটির সহসভাপতি পদেও আছেন বহিরাগতরা৷''

এটা কীভাবে সম্ভব হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং-এর কারণে এটা সম্ভব হয়েছে৷ যার যার গ্রুপকে শক্তিশালী করার জন্য বহিরাগত জামায়ত-শিবির ও বিএনপিকে আওয়ামী লীগে আনা হয়েছে৷ আবার অভিযোগ আছে টাকার বিনিময়েও তাদের কাছে পদ বিক্রি করা হয়েছে৷''

একই ধরণের কথা বলেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা যেন সফল হয় এটা আমাদের প্রত্যাশা৷ তাঁকে যদি সবাই সহযোগিতা করেন তাহলে তিনি সফল হবেন৷ কিন্তু শেখ হাসিনার পাশেও মোশতাকরা আছে৷ তার পাশেও মীরজাফররা আছে৷ তিনি যদি তাদের চিনে দূরে সরিয়ে দিতে পারেন, শাস্তি দিতে পারেন, তাহলে তিনিদুর্নীতি ও হাইব্রিডদের বিরুদ্ধেসফল হবেন৷''

তৃনমূলের এই নেতা বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি তৃনমূলের চেয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ে হাইব্রিড, বহিরাগত ও দুর্নীতিবাজ বেশি৷ আমার বিবেচনায় নেতৃত্বের পর্যায়ে এটা শতকরা ১০ ভাগের কম হবে না৷ আর তৃণমূলে কমপক্ষে পাঁচ ভাগ৷''

কিন্তু তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এদের বিদায় করবে কারা? কারণ এদের যারা দলে এনেছেন, দলে ঢুকিয়েছেন তারা আওয়ামী লীগেরই প্রভাবশালী নেতা৷ এখন তারাই যদি সিদ্ধান্ত নেন তাহলে তারাতো টিকে যাবেন৷''

মমতাজ উদ্দিন আহমেদ

আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল৷ তার আগেই প্রায় সব সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কাউন্সিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ আর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল হওয়ার আগেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কাউন্সিল ও নতুন কমিটি গঠন করবে আওয়ামী লীগ৷ ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ, ৯ নভেম্বর শ্রমিক লীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ২৩ নভেম্বর যুবলীগকে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷

জানা গেছে জেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে এরইমধ্যে কাউন্সিলের নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগেই জেলা, পৌর ও উপজেলা পর্যায়ে কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব আনতে হবে৷

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের জেলা কাউন্সিল ১৯ নভেম্বর৷ মহানগর ও উপজেলার কমিটি তার আগেই হবে৷ আমরা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশমত বহিরাগত ও দুর্নীতিবাজমুক্ত কমিটি গঠন করবো৷ জামায়াত ও বিএনপির কাউকে কমিটিতে রাখা হবে না৷''

তিনি জানান, ‘‘মহানগর ও থানা কমিটিতে জামায়াত ও বিএনপির লোক ঢুকেছে৷ বিশেষ করে মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ে বহিরাগত বেশি৷ আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি৷ কমিটিতে তারা জায়গা পাবেন না৷''

আর দুর্নীতিবাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তাদের চিহ্নিত করা কঠিন৷ তাদের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নজর রাখছে৷ আমরাও মনিটর করছি৷ কেন্দ্র থেকে তাদের একটা তালিকা পাব৷ কিন্তু এখানো পাইনি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান