জার্মানিতে ইহুদি উপাসনালয়ের উপর হামলার নিন্দা – DW – 10.10.2019
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ইহুদি উপাসনালয়ের উপর হামলার নিন্দা

১০ অক্টোবর ২০১৯

বুধবার জার্মানির হালে শহরে সিনাগগের উপর হামলার ফলে ইহুদি-বিদ্বেষ ও প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ সিনাগগের নিরাপত্তাপক্ষীদের তৎপরতায় আরও বড় হত্যালীলা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3R0da
জার্মানিতে বেড়ে চলা ইহুদি-বিদ্বেষ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Woitas

ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের জন্য বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিনটিকে ঘিরে আশঙ্কা থেকেই যায়৷ কারণ ইয়ম কিপুর এমন এক দিন, যখন গোটা বিশ্বের প্রায় সব ইহুদি মানুষ দৈনন্দিন জীবনের ছন্দ ভুলে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে উপবাস, অন্তর্দৃষ্টি ও ভুলভ্রান্তির জন্য সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনায় মগ্ন থাকেন৷ মানুষ ও জাতি হিসেবে প্রতিরোধের ক্ষমতা তখন কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে৷ ১৯৬৭ সালের এই দিনেই আরবরা ইসরায়েলের উপর হামলা চালিয়েছিল৷ ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সদস্যরা পারিবারের সঙ্গে নিভৃতে সময় কাটাচ্ছেন, এমনটা ধরে নিয়েই হিসেব করে সেই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল৷

২০১৯ সালের ৯ই অক্টোবর জার্মানির হালে শহরেও আততায়ী সেই সুযোগ নিতে চেয়েছিল৷ সিনাগগ বা ইহুদি উপাসনালয়ের মধ্যে তখন প্রার্থনা চলছে৷ ৭০ থেকে ৮০ জন মানুষ সেখানে ছিলেন৷ অস্ত্রশস্ত্র সঙ্গে নিয়ে, হেলমেটে ক্যামেরা লাগিয়ে হত্যালীলা চালাতেই সেই ব্যক্তি পথে নেমেছিল বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বন্ধ দরজার উপর বিস্ফোরক নিক্ষেপ করেও সফল হতে পারে নি আততায়ী৷ সিনাগগের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা সেই হামলা প্রতিহত করতে সফল হন৷ তখন ইহুদিদের গালিগালাজ করতে করতে গুলি চালিয়ে দুই জন পথচারীকে হত্যা করে সে৷ গোটা ঘটনার দৃশ্য ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছিল আততায়ী৷ ঘটনার আগে ও পরে প্রায় ২,২০০ মানুষ সেই দৃশ্য দেখেছে৷ আততায়ী সিনাগগে প্রবেশ করতে পারলে কী ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারতো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ হামলার পর পালানোর সময় গাড়ি নিয়ে ধাক্কা মারার পর আততায়ী পুলিশের হাতে ধরা পড়ে৷

এমন হামলাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ জার্মানি তথা ইউরোপে বেড়ে চলা ইহুদি-বিদ্বেষের প্রেক্ষাপটে সিনাগগ বা সামগ্রিকভাবে ইহুদিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে৷ এমন এক পবিত্র দিনে হালে শহরের সিনাগগের সামনে পুলিশ কেন তৎপর ছিল না, সেই অভিযোগ উঠছে৷ জার্মানির কেন্দ্রীয় ইহুদি সংগঠনের প্রধান ইয়োসেফ শুস্টার প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন৷ স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের ইহুদিরা রাজ্য প্রশাসনের কাছে আরও সুরক্ষার আবেদন করা সত্ত্বেও বাস্তবে কোনো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ উঠছে৷

জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার জানিয়েছেন, উগ্র দক্ষিণপন্থি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ইহুদি-বিদ্বেষের ভিত্তিতেই ২৭ বছর বয়সি জার্মান আতাতয়ী এই হামলা চালিয়েছে৷ পুলিশের ধারণা, সে একাই হামলার যড়যন্ত্র করেছিল৷ তবে ফেডারেল স্তরে তদন্তের পর গোটা ঘটনা জানা যাবে, এমনটা আশা করা হচ্ছে৷

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বুধবার সন্ধ্যায় বার্লিনে সিনাগগের কাছে এক সমাবেশে সংহতি দেখাতে উপস্থিত ছিলেন৷ হালে শহরে যারা হামলার শিকার হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এক মিনিট নীরবতা পালন করে৷ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস কড়া ভাষায় এই হামলার নিন্দা করেন৷ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, হালে শহরের ঘটনা ইউরোপে ইহুদি-বিদ্বেষের আরেকটি দৃষ্টান্ত৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)