জার্মানিতে আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপ – DW – 28.06.2011
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপ

২৮ জুন ২০১১

জার্মানির স্থানীয় ফোরামগুলির সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যৌথ কর্মকাণ্ড চলছে৷ পারস্পরিক একটা সুসম্পর্ক গড়ে তোলাই এর লক্ষ্য৷ আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি গ্রন্থ সঙ্কলন প্রকাশিত হয়৷

https://p.dw.com/p/11kXh
রমজানের সময় মুসলিম সমাজ সম্পর্কে প্রত্যক্ষ ধারণা পায় জার্মানির মানুষছবি: picture-alliance/dpa

স্থানীয় পর্যায়ে মুসলিম সংস্থাগুলির সঙ্গে বিভিন্ন জার্মান প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলির যোগসূত্র গড়ে তোলার জন্য অনেক কিছুই করা হচ্ছে৷ বিভিন্ন শহরের মেয়র, নারী ও যুব সমিতি, পুলিশ বিভাগ, স্কুল এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ আর এসব কিছুই তুলে ধরা হয়েছে ইসলাম ফোরাম নিয়ে লেখা ঐ গ্রন্থ সঙ্কলনটিতে৷

ইসলাম ফোরামের লক্ষ্য

২০০২ সালে গঠিত আন্তঃসাংস্কৃতিক পরিষদের প্রধান ধর্ম ও সমাজতত্ত্ববিদ ইউর্গেন মিকশ জার্মানিতে ইসলাম ফোরাম গড়ে তোলার ব্যাপারে বেশ কয়েক বছর ধরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘এর লক্ষ্য হল, বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে স্থানীয় সরকারের একটা সম্পর্ক গড়ে তোলা৷ সেই সাথে সংকট ও ভাষাহীনতা দূর করা৷''

Flash-Galerie Tag der offenen Moschee
মসজিদে খোলামেলা পরিবেশে নানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার প্রচেষ্টাছবি: DW

অনেক সময় সংলাপ গড়ে উঠতে সময় লাগে৷ তবে ইতোমধ্যে বেশ কিছু ইতিবাচক অভিজ্ঞতা ও সাফল্য দেখা গেছে৷ মিকশ আরো জানান, ‘‘নারী সংস্থা ও যুব সংগঠনগুলির কর্মতৎপরতা, স্কুলের প্রকল্প, প্রবীণদের জন্য সাহায্য, আন্তঃসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, থিয়েটার, স্কুলের পড়াশোনায় সাহায্য, চিত্র প্রদর্শনী, মসজিদ দর্শন ও অনেক কিছুর উল্লেখ করা যেতে পারে এক্ষেত্রে৷ আমরা আনন্দিত যে, স্থানীয় ইসলাম ফোরামগুলি বহুবার পুরস্কৃত হয়েছে৷''


এক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ব্যর্থতাও যে দেখা দেয়নি, তা নয়৷ তবে সাফল্যের পাল্লাটাই ভারি৷ মিকশ আরো জানান, ‘‘ইসলাম ফোরাম, খ্রিষ্টান ইসলাম সমিতি, আন্তঃধর্মীয় পরিষদ – এই সব আন্তঃসাংস্কৃতিক সহযোগিতামূলক উদ্যোগগুলি উগ্রপন্থা ও জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে এক কার্যকরী পদক্ষেপ৷''

মসজিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা

বার্লিনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এরহার্ট ক্যোর্টিং প্রথম থেকেই ইসলাম ফোরামের কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত৷ বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মসজিদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তাও চলছে তাঁর দপ্তর থেকে৷ বাড়ির পেছনের আঙ্গিনায় মুসলমানরা ধর্মকর্ম করেছেন বহুদিন ধরে৷ বলেন সামাজিক গণতন্ত্রী দলের এই রাজনীতিবিদ৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘২০০১ সাল থেকে এই অবস্থার একটা ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে৷ জার্মান ও মুসলিমরা সংলাপের জন্য পরস্পরের কাছাকাছি এসেছেন৷ ঈদ ও ধর্মীয় পালাপর্বনে জার্মানদের দাওয়াত দেয়াটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার এখন৷ মসজিদ দর্শনেও যান অনেক আগ্রহী জার্মান৷ গির্জা ও মুসলিম সমিতিগুলি মধ্যেও কাছাকাছি আসার উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় এখানে সেখানে৷''

Deutschland Islamkonferenz Symbolbild
ইসলাম ধর্ম আজ জার্মানির সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশছবি: AP

বহু মুসলিমদের কাছে ধর্মীয় বিশ্বাস জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ বার্লিনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, ‘‘আমাদের, সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠদের এই বিশ্বাসের প্রতি শুধু যে সহনশীল হতে হবে তাই নয়, বরং তাদের নিজস্ব জীবনধারাকে স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে হবে৷''

গড়ে উঠেছে একটি পরিষদ

২০০৮ সালে ‘জার্মান ফাউন্ডেশন ফর ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড মাইগ্রেশন' নামে একটি পরিষদ গঠিত হয়, যার সাথে ৮টি ফাউন্ডেশন যুক্ত৷ এই পরিষদের প্রধান ক্লাউস বাডে৷ পরিষদের পক্ষ থেকে বিদেশি বংশোদ্ভূতদের জার্মান সমাজে সম্পৃক্ততা নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে৷ ২০০৯ সালে চালানো এক সমীক্ষায় অভিবাসীদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণের সঙ্গে বসবাস করাটা তাদের কাছে সমস্যাজনক মনে হয় কিনা৷ ক্লাউস বাডে এ প্রসঙ্গে জানান, ‘‘আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক উত্তর পেয়েছি৷ সমস্যাজনক নয়, জার্মান সমাজে সম্পৃক্তায় আগ্রহ ও জার্মান জনসাধারণের প্রতি আস্থা ফুটে উঠেছে তাদের উত্তরে৷''

২০১০ সালের শেষ দিকে জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাক্তন কর্মকর্তা টিলো সারাসিন অভিবাসীদের সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করায় তর্ক বিতর্কের এক ঝড় বয়ে যায়৷ আর এই পরিপ্রক্ষিতে অনুষ্ঠিত সমীক্ষায় অভিবাসীদের এক তৃতীয়াংশ জার্মান সমাজে সম্পৃক্তার বিষয়ে নৈরাশ্য প্রকাশ করে৷ জার্মানদের উত্তরেও একই রকম মনোভাব লক্ষ্য করা যায়৷ অভিবাসী বিষয়ক গবেষক ক্লাউস বাডে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আসল কথা হল, আমাদের এই আন্তঃসাংস্কৃতিক সমাজে এই প্রশ্নের ক্ষেত্রে বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে৷''

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান