‌এবার স্বপ্ন গভীরে যাওয়ার – DW – 23.10.2017
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌এবার স্বপ্ন গভীরে যাওয়ার

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৩ অক্টোবর ২০১৭

ভারতের প্রথম ভূগর্ভস্থ রেল যাতায়াত ব্যবস্থা কলকাতায়৷ যাত্রা শুরুর তিন দশক পর এবার গঙ্গা নদীর (‌হুগলি) দুই পাড়কে জুড়তে চলেছে কলকাতা মেট্রো রেল৷

https://p.dw.com/p/2mLab
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

সবার স্বপ্ন থাকে আকাশ ছোঁয়ার৷ কিন্তু উলটো বেগে ছুটছে কলকাতা মেট্রো রেল৷ আকাশ নয়, ভূগর্ভের আরও গভীরে পৌঁছাতে চাইছে৷ ১০ তলা বাড়ি যতটা উঁচু, হুগলী নদীর জলতলের ততটা গভীর দিয়ে খোঁড়া হয়েছে সুড়ঙ্গ৷ সেই সুড়ঙ্গপথ দিয়ে যাতায়াত করবে কলকাতা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো৷ জুড়ে দেবে হুগলির পূব ও পশ্চিম, দুই পাড়৷ শুধু কলকাতা শহর, পশ্চিমবঙ্গ বা ভারত নয়, সারা বিশ্বের ব্যস্ততম রেল স্টেশনগুলির অন্যতম দু'টি স্টেশন হাওড়া এবং শিয়ালদহকে যুক্ত করবে৷ শিয়ালদহ ছুঁয়ে এই লাইন চলে যাবে বিধাননগর, বা সল্টলেক উপনগরী পর্যন্ত৷ নতুন এই রুটের কথা ভাবা হয়েছিল অনেক আগেই, সেই সত্তরের দশকে৷ কাজ শুরুর নির্দেশ আসে ২০০৮ সালে৷ এবং তার সমাপ্তির দিনও কাছে চলে এসেছে৷ ২০২০ সালেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু করে দেওয়ার লক্ষ্য স্থির হয়ে আছে৷ এটাই হবে কলকাতার দ্বিতীয় মেট্রো, এবং ভারতে প্রথম কোনো নদীর তলা দিয়ে মেট্রো চলাচল৷

Ost West Metro Tunnel   Kalkutta
কলকাতায় পাতাল রেলের কাজ চলছে...ছবি: DW/S. Bandopadhyay

এছাড়া ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা কলকাতা মেট্রোর বর্তমান রুটও অনেকটাই সম্প্রসারিত হচ্ছে, সংযোজিত হচ্ছে নতুন যাত্রাপথ৷ টালিগঞ্জ-দমদম রুটটি আগেই সম্প্রসারিত হয়ে ২০১০ সাল থেকে উত্তরে নোয়াপাড়া এবং দক্ষিণে নিউ গড়িয়ার মধ্যে যাতায়াত করছে৷ তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দক্ষিণেশ্বর-ঠাকুরপুকুরের দীর্ঘ যাত্রাপথ, যা কলকাতার দক্ষিণ শহরতলীকে সরাসরি যুক্ত করবে কলকাতা বিমানবন্দরের সঙ্গে৷ অন্যদিকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোরও মধ্য কলকাতার ফুলবাগান থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত ‘‌এলিভেটেড লাইন’, অর্থাৎ মাটির ওপর, প্রায় চার তলা উচ্চতায় সারিবদ্ধ স্তম্ভের ওপর রেললাইন পাতার কাজ প্রায় শেষ৷ খুব দ্রুত এই অংশে মেট্রো চালু করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানালেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার ইন্দ্রানী ব্যানার্জি৷

‘মেট্রোর পুরনো কামরাগুলি বাতিল করে নতুন কামরা আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে’

কিন্তু দেশের প্রথম মেট্রো যেমন, তেমন সবথেকে পুরনো মেট্রোও বটে৷ একসময় যেমন তার সুনাম ছিল, বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন হওয়ার গর্বও, তেমন এখন তার সর্বাঙ্গে সময়ের আঁচড়৷ বিশেষ করে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, কোচির আধুনিক, ঝাঁ চকচকে মেট্রোর পাশে কলকাতা মেট্রোকে এখন নেহাতই সেকেলে লাগে, কিছুটা বিবর্ণও৷ শ্রীমতী ব্যানার্জি জানালেন, কলকাতার মেট্রোর পুরনো কামরাগুলি সব বাতিল করে নতুন, আধুনিক, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কামরা আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে৷ পর্যায়ক্রমে এই নতুন কামরা নিয়ে আসা হবে৷ মেট্রোর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে আজকাল৷ বিশেষ করে সব স্টেশনেই, বিমানবন্দরের ধাঁচে বসানো লাগেজ স্ক্যানার যন্ত্রগুলি অকেজো হয়ে পড়ে থাকে৷ মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় নতুন করে টেন্ডার ডাকতে হয়েছে৷ ফলে কিছুটা সময় লাগছে৷ তবে হাতে ধরা স্ক্যানার এবং মেটাল ডিটেক্টর গেট পুরোমাত্রায় সক্রিয়৷ সশস্ত্র রেল সুরক্ষা বাহিনী এবং মেট্রো রেল পুলিশের পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়াররাও এখন যোগ দিয়েছেন নিরাপত্তার কাজে৷ এছাড়া সর্বত্র আছে সিসি টিভি, যার মাধ্যমে স্টেশন মাস্টারের দপ্তর থেকে চব্বিশ ঘণ্টাই নজরদারি চলে৷ ফলে সুরক্ষা সে অর্থে সংকটে নয়৷

এছাড়া মেট্রোর আয় বাড়ানোর জন্য স্টেশন চত্বরের ফাঁকা জায়গাগুলি কাজে লাগানোর কথাও ভাবা হচ্ছে কি?‌ জনসংযোগ আধিকারিক জানালেন, একেবারেই তাই৷ নিয়মিত গড়ে ৫ লাখ যাত্রীকে বাদ দিয়েও দোকান, খাওয়ার জায়গা, ইত্যাদির জায়গা দিয়ে বাইরের লোকের কাছে স্টেশনগুলি আকর্ষণীয় করে তোলার কথা ভাবা হয়েছে৷ মেট্রোর নিজস্ব একটি কমিটি খতিয়ে দেখছে, কোন জায়গাগুলি এভাবে কাজে লাগানো যায়৷