দারিদ্র্য থেকে সমৃদ্ধি – DW – 10.04.2014
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দারিদ্র্য থেকে সমৃদ্ধি

১০ এপ্রিল ২০১৪

বিশ্বের দরিদ্রতম মহাদেশ আর বিশ্বের সমৃদ্ধতম মহাদেশের মধ্যে ভৌগোলিক ফারাক শুধু ভূমধ্যসাগর৷ সেটা পার হতে পারলেই কর্ম, অর্থ, স্বাচ্ছন্দ্য, মানবাধিকার৷ ইউরোপ মানেই যে স্বপ্ন৷

https://p.dw.com/p/1BeSD
ছবি: picture-alliance/ROPI

দারিদ্র্য ও হতাশা থেকে পলায়নরত কৃষ্ণাঙ্গ মানুষরা সাহারা মরুভূমি পার হয়ে ভূমধ্যসাগরের উপকূলে এসে পৌঁছান৷ সেখান থেকে নড়বড়ে, মরচে-ধরা জাহাজ কিংবা নৌকায় চড়ে ইটালির লাম্পেদুসা দ্বীপে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা; নয়ত মরক্কোর উত্তর প্রান্তে তিন তিনটি বেড়া পার হয়ে স্পেনের রাজ্যাঞ্চল মেলিয়া বা সেউটা-য় ঢোকার চেষ্টা৷

ভূমধ্যসাগরের ঢেউ-এ আফ্রিকার ‘বোট-পিপল'-দের যে অবস্থা, তেমনই মরক্কোয় আফ্রিকানদের কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে ‘সত্যাগ্রহ': হাত-পা কেটে রক্ত ঝরছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা হিমেল বাতাসে বাদুড়ের মতো ঝুলে থাকা – এ সবই শুধু ইউরোপের মাটিতে পা দেবার জন্য, সেখানে ‘রাজনৈতিক' আশ্রয় পাবার আশায়৷ মাঝখান থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিব্রত, বিড়ম্বিত৷

Flüchtlinge in Melilla 3. April 2014
স্পেনের মেলিয়ায় কাঁটাতারের বে়ড়া পেরোনোর চেষ্টাছবি: picture-alliance/dpa

ইটালি অথবা স্পেনের যুক্তি হলো: আমরা পুরো ভারটা টানব কেন? ইইউ-র বাকি সদস্যদেশগুলির সন্দেহ: ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলি এই মনুষ্যস্রোত রোখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না৷ উত্তর আফ্রিকার উপকূলীয় দেশগুলির বিরুদ্ধেও ইউরোপের অনুরূপ অভিযোগ৷ কিন্তু দু'টি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে: আফ্রিকার প্রগতির, উন্নতির দায়িত্ব আসলে কার? ইউরোপ কি নিজেকে দুর্ভেদ্য করে তুলেই সেই দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাবে? অর্থাৎ এসে পড়ছে ইতিহাস ও নৈতিকতার প্রশ্ন৷ সেই সঙ্গে এই বাস্তব উপলব্ধি যে, আফ্রিকায় যত হতদরিদ্র, হতভাগ্য মানুষ রয়েছে, তাঁদের সকলকে ইউরোপে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়৷ অপরদিকে প্রক্তন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ইউরোপ তার দায়িত্ব এড়ায়ই বা কী করে?

গতবছর হাজার খানেক আফ্রিকান মেলিয়া-য় ঢুকতে সমর্থ হয়৷ এ বছরের প্রথম তিন মাসেই সে' সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে৷ গত ১৮ই মার্চে ৫০০ আফ্রিকান একদিনে স্প্যানিশ এনক্লেভ-টিতে ঢুকতে সমর্থ হয়৷ অপরদিকে যে সব আফ্রিকানরা নৌকায় চড়ে লাম্পেদুসায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেন, এই বসন্তে তাঁদের সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ৷ অপরদিকে মেলিয়া আর সেউটা স্থলপথেই পৌঁছানো যায়, কাজেই এই দু'টি স্থান হলো ইউরোপগামীদের তীর্থবিশেষ: মধ্য বা পশ্চিম আফ্রিকা থেকে মরক্কো পৌঁছাতেই তাঁদের বছর দুয়েক লেগে গেছে৷ এবার তাঁরা স্প্যানিশ এনক্লেভ দু'টির কাছের পাহাড়ে ক্যাম্প করে বসে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে৷ ধরা পড়ে ফেরৎ পাঠালেও কুছ পরোয়া নেই, পরে আবার ঢোকার চেষ্টা করা যাবে৷

মরক্কো আর স্পেন বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়ে জলপথে ইউরোপে আসাটা সমস্যাকর করে তুলেছে; ঠিক সেই অনুপাতে মেলিয়া আর সেউটা-র উপর ইউরোপ-অভিলাষীদের চাপ বাড়ছে৷ মরক্কো ও স্পেনের কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী প্রায় ৩০ হাজার বেআইনি অভিবাসী মরক্কোয় অবস্থান করছে, ইউরোপে পৌঁছানোর আশায়৷ অপরদিকে যাঁরা কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে স্বপ্নের ‘ইউরোপে' পা রাখছেন, তাঁদের তৎক্ষণাৎ ফেরত পাঠানোর, এমনকি মারধোর করার ঘটনাও ঘটছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি যে বিষয়ে উদ্বিগ্ন৷ তবে এই নির্দয় ব্যবহারে আফ্রিকার মানুষগুলি পিছপা হবার নন – তাঁরা স্বদেশে এর চেয়ে অনেক বেশি বিভীষণ পরিস্থিতি দেখে এসেছেন৷

এসি/ডিজি (এপি, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য