স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের শাস্তি যখন কারাদণ্ড এবং নির্যাতন

বিশ্বব্যাপী কতজন সাংবাদিক, কবি এবং লেখক কারাবন্দি বা নিখোঁজ তার সঠিক হিসাব কারো জানা নেই৷ এমনকি লেখকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘পেন’-এর কাছে মামলার যে তালিকা রয়েছে, সেটাও পূর্ণাঙ্গ তালিকা নয়৷

ওয়াইল আব্বাস একজন মিশরীয় ব্লগার৷ তাঁর ব্লগে নিজ দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি, পুলিশের দ্বারা সহিংসতার কথা তুলে ধরতেন তিনি৷ এসব লেখার কারণে ২০১৭ সালের মে মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এখনো তিনি কারাবন্দি৷ পুলিশ তাঁর লেখার সব সরঞ্জাম এবং ব্যক্তিগত অনেক জিনিস জব্দ করেছে৷

বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলার সময় বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করে আল-জাজিরা টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী, লেখক ও অধিকার কর্মী শহীদুল আলম৷ আগস্টের ৫ তারিখে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের বিশেষ ধারায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এখনো তিনি কারাবন্দি৷ ২০১৮ সালে মানবিকতার আলোকচিত্রের জন্য তিনি লুসি পুরস্কার পান৷ ২০ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি৷

২০১৭ সালের মার্চ মাসে নিজ অ্যাপার্টমেন্টে খুন হন মেক্সিকোর এই সাংবাদিক৷ তাঁকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়৷ তিনি দেশের রাজনীতিবিদ এবং মাদকপাচারকারীদের মধ্যে যোগসূত্র এবং দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করেছিলেন৷ ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে ৯৬ জন লেখক এবং সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে৷

ইরিত্রিয়ান-সুইডিশ এই লেখকের ঘটনা খুবই হতাশাজনক৷ ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে ইরিত্রিয়া থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি এবং কারাবন্দি হওয়ার পর তাঁর আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি৷ গত ১৭ বছর ধরে কেউ তাঁর সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে পারেনি৷ তিনি জীবিত আছেন কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে৷

২০১৪ সালে ক্রাইমিয়ায় বিক্ষোভ চলাকালে রাশিয়ার বিরোধিতা করলে ইউক্রেনের লেখক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ওলেগ সেন্তসভকে রুশ নিরাপত্তাকর্মীরা গ্রেপ্তার করে৷ রাশিয়ার সামরিক আদালত তাঁকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে৷ মুক্তচিন্তার বিকাশে ভূমিকা রাখায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ মানবাধিকার বিষয়ক পুরস্কার সাখারভ সম্মাননা পেয়েছেন তিনি৷