সুদিনের অপেক্ষায় সিনেমা – DW – 17.10.2020
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুদিনের অপেক্ষায় সিনেমা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৭ অক্টোবর ২০২০

সিনেমা হল খোলা হলেও এখনো তেমন সাড়া মেলেনি৷ করোনা আতঙ্কে হলমুখী নন দর্শকরা৷ আগামী সপ্তাহে নতুন ছবি মুক্তি পেলে বদলাতে পারে পরিস্থিতি৷

https://p.dw.com/p/3k49x
Indien Kalkutta | Coronavirus: Kinos kämpfen mit geringen Besucherzahlen
ছবি: Payel Samanta/DW

কোভিড সংক্রমণের জেরে যে লকডাউন কার্যকর করা হয় তাতে কয়েক মাস বন্ধ ছিল সিনেমা হল৷ সিঙ্গল স্ক্রিন থেকে মাল্টিপ্লেক্স সব জায়গায় তালা পড়েছিল৷ সংক্রমণ রুখতে ব্যবসায় বিপুল ক্ষতি হয়েছে হল মালিকদের৷ অবশেষে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) নির্ধারণ করে প্রেক্ষাগৃহ খোলার অনুমতি দিয়েছে কয়েকটি রাজ্যের সরকার৷ পশ্চিমবঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে খুলে গেছে অনেক হল৷ আরো কয়েকটি খুলতে চলেছে আগামী কয়েকদিনে৷ কিন্তু প্রাথমিকভাবে অভিজ্ঞতা ভালো নয় প্রেক্ষাগৃহের পরিচালকদের৷

পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় সিঙ্গল স্ক্রিন, মাল্টিপ্লেক্স একটি একটি করে খুলছে৷ এতদিন পর হল খোলায় যে উৎসাহ প্রত্যাশা করেছিলেন মালিকরা তার ছিটেফোঁটা দেখা যায়নি৷ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে হাতেগোনা দর্শক হয়েছে, কোথাও আবার পর্যাপ্ত দর্শক না হওয়ায় বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সিনেমা প্রদর্শন৷ একাধিক জায়গায় একজন দর্শকও উপস্থিত হননি সিনেমা দেখার জন্য৷ 

যদিও এতে হতাশ হতে রাজি নন সিনেমা প্রদর্শনের ব্যবসায় যুক্ত মানুষেরা৷ কলকাতার বিখ্যাত মাল্টিপ্লেক্স ‘কার্নিভাল সিনেমা'র একটি শাখায় শুক্রবার থেকে ছবির প্রদর্শনী শুরু হয়েছে৷ সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজার কুন্তল ঘোষ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এতদিন হল বন্ধ ছিল৷ দর্শকদের কাছে সঠিক তথ্য নেই সিনেমা দেখানো হচ্ছে কিনা৷ যেভাবে চারপাশে মানুষ বাইরে বেরিয়েছে তাতে হলে আসা নিয়ে আলাদা আতঙ্ক থাকার কথা নয়৷ প্রদর্শনী শুরু হওয়ার কয়েক দিন পর ইতিবাচক ফল দেখা যাবে৷ প্রথমে দর্শক কম হতেই পারে৷” ‘আইনক্স'-এর রিজিওনাল ম্যানেজার (পূর্বাঞ্চল) অমিতাভ গুহঠাকুরতা বলেন, ‘‘শুধু সরকারি নির্দেশ নয়, তার সঙ্গে আরো কিছু সতর্কতা আমরা নিচ্ছি৷ বুকিং হচ্ছে শুধু অনলাইনে৷ পুরো পরিষেবাই হচ্ছে পেপার ও কনটাক্টলেস৷'' আইনক্স জানিয়েছে, খাবারের ব্যাপারেও তারা করোনাকে মাথায় রাখছে৷ বিশেষ সব্জি সমৃদ্ধ খাবার পরিবেশন করা হবে দর্শকদের৷ থাকবে নানা ধরনের গ্রিন টি৷ এর সঙ্গে প্রবেশের সময় থার্মাল চেকিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে৷ 

প্রথমে দর্শক কম হতেই পারে: কুন্তল

সরকার নির্ধারিত প্রোটোকল অনুযায়ী সংক্রমণ রুখতে প্রতিটি হলে আসন সংখ্যার অর্ধেক টিকিট বিক্রি করা যাবে৷ থাকছে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা৷ এজন্য টিকিটের দাম বাড়াতে পারবে না কর্তৃপক্ষ৷ অর্থাৎ আগের থেকেও খরচ বাড়বে তাদের৷ ‘আইনক্স' বা ‘কার্নিভাল'-এর মতো মাল্টিপ্লেক্স সংস্থা এই ক্ষতি সামলে নিলেও আগে থেকেই সংকটে থাকা সিঙ্গল স্ক্রিনের কী হবে? কলকাতার ঐতিহ্যশালী সিনেমা হল ‘প্রিয়া'র কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত বলেন, "সব একেবারে বন্ধ ছিল৷ সেটা আস্তে আস্তে চালু করতে হবে৷ সেজন্য গোড়ায় কিছু বাড়তি বিনিয়োগ দরকার৷ এ ছাড়া কোনো উপায় নেই৷ ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হলে ব্যবসা আগের জায়গায় ফিরে আসবে৷”

যদিও সিনেমার প্রযোজক, পরিবেশক সংস্থাগুলির সংগঠন ‘ইম্পা'-র রতন সাহা মনে করেন, "নতুন কোনো সিনেমা নেই৷ তাই হল খুললে আদৌ লাভ হবে কিনা সন্দেহ৷'' 

দর্শকরা হলে ফিরবেন: অরিজিৎ

তাই দর্শকদের টানতে অফার সামনে এনেছে বিভিন্ন সংস্থা৷ কার্নিভাল একটার সঙ্গে আরেকটা টিকিট ফ্রি দিচ্ছে, কোভিড যোদ্ধা হলে নিখরচায় মিলবে সিনেমা দেখার সুযোগ৷ যদিও অনেকে আপাতত বাড়িতে বসেই সিনেমা দেখতে পছন্দ করছেন৷ উল্টোডাঙ্গার বাসিন্দা অপূর্ব রায় বলেন, "সপ্তাহের শেষে শনিবার রাতে একটা সিনেমা দেখা আমারও বাঁধা ছিল৷ মাস ছয়েক সেটা বন্ধ৷ তাই মোবাইল, কম্পিউটারে সিনেমা দেখছি৷ সেখানে নতুন সিনেমা রিলিজ করছে৷ সঙ্গে রয়েছে ওয়েব সিরিজ৷ আরো কয়েকটা দিন না গেলে হলে যাচ্ছি না৷” আবার অনেকে হল ছাড়া সিনেমা দেখার কথা ভাবতেই পারেন না৷ মূলত এই দর্শকরাই এখন হল মালিকদের পুঁজি৷ অরিজিৎ দত্তের বক্তব্য, "শোলে, সাউন্ড অফ মিউজিক মোবাইলে দেখে কি আনন্দ পাওয়া যায়? ছবি বড় পর্দায় দেখার মজা আলাদা, তাই দর্শকরা হলে ফিরবেন৷ শুধু একটু সময় দিতে হবে তাদের৷” যদিও যুগলদের প্রেক্ষাগৃহে পাশাপাশি বসে সিনেমা দেখার সু্যোগ আপাতত মিলবে না, এটা নিশ্চিত করেছেন হল পরিচালকেরা৷

আপাতত নতুন ছবির মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন হল কর্তৃপক্ষ৷ পিভিআর, সিনেপোলিস থেকে সিঙ্গল স্ক্রিনের পরিচালকরা তাকিয়ে আছেন ২১ তারিখের দিকে৷ পুজোতে নতুন বাংলা ছবি মুক্তি পায় প্রতি বছর৷ এবারও  অনেক বাধা কাটিয়ে সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হচ্ছে না৷  মুক্তি পেতে চলা ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে ‘ড্রাকুলা স্যার', ‘সাহেবের কাটলেট', ‘চলো পটল তুলি', ‘রক্তরহস্য' ইত্যাদি৷ যে ছবি ইন্টারনেট সার্চ করে দেখার সুযোগ নেই, সেগুলির হলে প্রদর্শনী শুরু হলে দর্শক আসবেনই, এমনই প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য