বাংলাদেশে ফিরেছে প্রায় ২৩ হাজার প্রবাসী শ্রমিক – DW – 15.07.2009
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে ফিরেছে প্রায় ২৩ হাজার প্রবাসী শ্রমিক

১৫ জুলাই ২০০৯

অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে বিভিন্ন দেশে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ২০০৯ এর প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশে ফিরেছে প্রায় ২৩ হাজার প্রবাসী শ্রমিক৷

https://p.dw.com/p/IpU1
ফাইল ফটোছবি: AP

এমন কোন দিন নেই যে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের বারান্দা ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠেনা বিদেশ ফেরত কর্মীদের হতাশা আর দু.স্বপ্নে৷ শ্রমবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে অনেক ছোট বড় কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমন কি, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি নির্মাণ শ্রমিক যে দেশে যায়, সেই সৌদি আরবে এখন বন্ধ আছে অনেক নির্মাণ কাজ৷ তারই প্রভাবে প্রতিদিনই চাকরি হারাচ্ছে বাংলাদেশী শ্রমিক৷ বিদেশ থেকে চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরেছেন এমনই বেশ কিছু নি:স্ব হয়ে পড়া শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন৷

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি থানার চর এলাকার গ্রাম হড়মা ৷ তারই অধিবাসী মোহাম্মদ ইসমাইল৷ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চাকরি হারিয়ে এখন নি:স্ব৷ তার মতো আরো অনেকেই আছেন এখন গ্রামে৷ এই গ্রামে প্রতিদিনই খালি হাতে অসহায় শ্রমিকরা গ্রামে ফিরছেন৷ চাষের জমি, ভিটে মাটি সবই গেছে তাদের বিদেশ যাওয়ার টাকা জোগাড় করতে৷ এমন কি চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে এখন পাওনাদারের ভয়ে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে সব সময়৷

এই রকম চিত্র পুরো গোদাগাড়ি থানার জয়নাবাদ, আচারিপাড়া সহ অনেক গ্রামেই৷ বিশ্ব ব্যাংকের এক হিসাব মতে, ২০০৯ সালে এক লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক বিদেশ থেকে ফেরত আসবে৷ যার বেশিরভাগই আসবে দুবাই থেকে৷ গেল ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে দেশে ফিরেছে ১৫ হাজার বাংলাদেশী৷ বিমান বন্দরের তথ্যের বরাত দিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর কাছ থেকে এই তথ্য জানা গেছে৷ অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চাকরি হারিয়ে দেশে ফেরা শ্রমিকদের এই হার আরো কয়েক মাস অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়৷ শ্রমিকদের এই দেশে ফেরা যেমন কমাচ্ছে রেমিটেন্সের পরিমাণ, অন্যদিকে তেমন বাড়াচ্ছে বেকারত্ব৷

বিশ্বের প্রায় ৬৯টি দেশে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাজ করলেও মধ্যপ্র্যাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশের শ্রমিক যাতায়তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷২০০৭-০৮ অর্থবছরের প্রান্তিক সময়, নভেম্বর থেকে জনুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে জনশক্তি রফতানির পরিমান ছিল ২লাখ ৫৩ হাজার ৷ ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে একই সময়ে, দেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার৷ গেল জানুয়ারি মাসে ৫০ হাজার ৬৩২ জন , ডিসেম্বরে ৪৪ হাজার ৩৭৮ জন এবং নভেম্বরে ৬৮ হাজার ৭৪ জন বিদেশ গেছেন৷ অপর দিকে ২০০৭-৮ অর্থবছরে নভেম্বরে ৮৩ হাজার ৩৩৫ জন, ডিসেম্বরে ৭৭ হাজার ৯৭৭জন এবং জানুয়ারিতে ৯১ হাজার ৯৯৯জন শ্রমিক বিদেশ যান৷ দুই সময়ের জনশক্তি রফতানির হিসাব পর্যালোচনা করলে বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে, জনশক্তি রফতানির পরিমাণ কি হারে কমেছে৷ একদিকে জনশক্তি রফতানির পরিমাণ যেমন কমেছে তেমনি কমছে দেশে আসা রেমিটেন্সের পরিমাণ৷ বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে মোট রেমিটেন্সের ৬৫ ভাগ আসে ৷ যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপ থেকে আসে ২৭ ভাগ৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্যমতে, এবছর বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ উল্ল্যেখযোগ্য হারে কমবে৷ ২০০৮ সালে বাংলাদেশে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল, সাত বিলিয়ন৷ আর ২০০৯ এর প্রথম মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৮৫৯ মিলিয়ন ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭৮৪ মিলিয়ন ডলার৷

দেশের অর্থনীতিবীদ এবং শ্রম বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশ ফেরত অধিকাংশ কর্মীরাই যে ধরণের কাজ করতে অভ্যস্ত সে ধরণের কাজের পরিবেশ বাংলাদেশে নেই৷ তাদের মতে, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে কেটে যেতে পারে ৷ সেসময় প্রচেলিত শ্রমবাজারের পাশাপাশি নতুন শ্রমবাজার খোঁজার প্রতিও সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে৷

প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য