ফিনিক্স এখন মঙ্গলে – DW – 26.05.2008
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিনিক্স এখন মঙ্গলে

আরাফাতুল ইসলাম২৬ মে ২০০৮

নাসার এবারকার মঙ্গল গ্রহ অভিযান ইতিমধ্যেই সাফল্যের নতুন নির্দশন রেখেছে৷ ফিনিক্স মহাকাশ যান মহাশুন্যে কোটি কোটি কিলোমিটার পাড়ী দিয়ে সুদুর রক্তিম গ্রহটির উত্তর মেরুতে গিয়ে নেমেছে এবং ইতিমধ্যেই পাঠাতে শুরু করেছে ছবি৷

https://p.dw.com/p/E6RW
মঙ্গলে নামছে ফিনিক্সছবি: picture-alliance/ dpa

অনেক উত্কন্ঠা আর প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঙ্গল গ্রহের উত্তর মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করেছে মার্কিন মহাকাশযান ফিনিক্স৷ রোববার গ্রিনিচ মান সময় ২৩.৫৩ ঘণ্টায় মহাকাশযানটি মঙ্গলগ্রহে অবতরণ করে৷ গ্রহটিতে পানির অস্তিত্ব খুঁজতে এবং সেখানে জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় অবস্থা মূল্যায়ন করতেই এ মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাসার কর্মকর্তারা৷

ইতিমধ্যে ফিনিক্স মঙ্গলগ্রহের ছবি পাঠাতে শুরু করেছে৷ প্রথম ছবিটি মঙ্গলগ্রহের উত্তর মেরুর৷ ছবিটি পাথুরে, প্রচন্ড শৈত্যে জমাটবাধাঁ মাটির৷ মঙ্গলের উত্তর মেরুর এমন ছবি আগে কখনো দেখা যায়নি৷

Mars Landung von US Sonde Phoenix, Mitglieder feiern die Landung
নাসায় উল্লাসিত বিজ্ঞানীরাছবি: AP

এরপরের ছবিগুলোতে ফিনিক্স এর অবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে৷ ফিনিক্স এর চালিকা শক্তি হচ্ছে সৌর বিদ্যুত৷ আর এই বিদ্যুত পেতে ফিনিক্স এর গায়েই রয়েছে সোলার প্যানেল৷ একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে সোলার প্যানেলটি সঠিকভাবে অবস্থান করছে৷ এছাড়া ফিনিক্স এর স্টোরিও ক্যামেরা এবং আবহাওয়া স্টেশনও ঠিকঠাক আছে৷

কয়েকটি ছবিতে মঙ্গলের একটি উপত্যকা দেখা যাচ্ছে, যেখানে জমাটবাধা পানি আছে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা৷ এই উপত্যকাটি ফিনিক্স এর রোবোটিক বাহুর নাগালের মধ্যে রয়েছে৷

তবে এই রোবোটিক বাহু এখনো সচল করা হয়নি৷ আশা করা হচ্ছে মঙ্গলবার এই বাহু্টি কাজ শুরু করবে৷ বাহুটি লম্বায় সাত দশমিক সাত ফিট৷ মঙ্গলের মাটির তিনফুট গভীর পর্যন্ত এই বাহুটি ঢুকতে পারবে৷ মুলত মাটি এবং পানির নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হবে এই রোবোটিক বাহু৷ বাহুটিতে একটি ৩৫ মিলিমিটার সমমানের ল্যান্সযুক্ত শক্তিশালী ক্যামেরাও রয়েছে৷

পৃথিবী থেকে নয় মাসের যাত্রা শেষে এ মহাকাশযানটি মঙ্গল গ্রহে পৌছাঁয়৷ পৃথিবী থেকে তার যাত্রাপথের দুরত্ব ছিলো প্রায় ৬ লক্ষ ৭৫ হাজার কিলোমিটার৷ ফিনিক্স নামের এই মার্কিন মহাকাশযানটিই প্রথম কোনো মহাকাশযান হিসেবে, কোনো গ্রহের মেরু অঞ্চলে সফলভাবে অবতরণ করল৷

নাসা'র প্রধান মহাকাশ বিজ্ঞানী এড ওয়েইলার এ অভিযান সম্পর্কে বলেন, আগের দুইটি মঙ্গল অভিযানের চেয়ে এটা অনেক বেশি দুঃসাধ্য ছিল৷

Mars Landung von US Sonde Phoenix, System Ingenieur Maria Schellpfeffer befasst sich mit der Landung
নিবিড় পর্যবেক্ষণে ফিনিক্সছবি: AP

২০০২ সালে বিজ্ঞানীরা মঙ্গলের মেরু অঞ্চলে মাটির নীচে বরফজমা তরলের সন্ধান পায়৷ এই তরলের নমুনা সংগ্রহ এবং জীবনের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদানের খোঁজে ২০০৭ সালের আগস্টে ফিনিক্সকে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়৷

এর আগে ১৯৯৯ সালে নাসা মঙ্গলের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণের চেষ্টা চালায়৷ কিন্তু মিশনের একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তা আর সফল হয়নি৷ এর পরের মহাকাশযানের মিশনও বাতিল করে নাসা৷

তবে 'স্পিরিট' এবং 'অপরচুনিটি' কে পানির সন্ধানের জন্য মঙ্গলে পাঠাতে সক্ষম হয় তারা৷ আর তাই ফিনিক্স মঙ্গলে একা নয়, স্পিরিট আর অপরচুনিটিকে সঙ্গে নিয়ে আগামী বছর তিনেক মঙ্গলে থাকবে সে, এমন প্রত্যাশাই করছেন বিজ্ঞানীরা৷