বিদায় জর্জ ডাব্লিউ বুশ – DW – 19.01.2009
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদায় জর্জ ডাব্লিউ বুশ

দেবারতি গুহ১৯ জানুয়ারি ২০০৯

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে মঙ্গলবার শপথ নেবেন বারাক ওবামা৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হবে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের কার্যকাল৷

https://p.dw.com/p/GbWb
বারাক ওবামার সঙ্গে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশছবি: AP

নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য বুশ পিছনে ফেলে যাচ্ছেন দু-দুটি অসমাপ্ত যুদ্ধ, অর্থনৈতিক মন্দা এবং বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রিয় এক রাজনৈতিক অবস্থান৷

গত আট বছর ধরে জর্জ বুশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন ছিলেন৷ ২০০১ সালের ১১-ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে জঙ্গি সন্ত্রাসীদের আক্রমণের পর, প্রাথমিকভাবে ব্যাপক সহানুভূতি ও সমর্থন পান বুশ৷ কিন্তু, বুশ তাঁর একপেশে পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বে এতটাই একঘরে করে ফেলেন - যেমনটা তাঁর কোনো পূর্বসূরি করেন নি৷ আমেরিকাকে বিশ্বের একমাত্র নীতি-নির্ধারক পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে তাঁর সর্বাত্মক উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে বলা চলে না৷ বিশেষ করে ইরাক যুদ্ধের প্রশ্নে তিনি এক মারাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা শুধুই বিপর্যয় বয়ে এনেছে৷

Ausschnitt George W. Bush bei Interview im Irak von Journalisten mit Schuh beworfen Schuhwurf
ইরাকে জুতার আক্রমনে বিব্রত বুশছবি: AP

কারণ, আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে আমেরিকা যেভাবে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে ইরাকে সরকার বদলের উদ্যোগ নিয়েছিল, তা যে নিন্দনীয় ছিল - তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে, আল কায়দা দমন, সাদ্দাম হুসেনের হাতে মারণাত্মক অস্ত্র রয়েছে - ইত্যাদি নানা কারণ দেখিয়ে ইরাক যুদ্ধের সপক্ষে যুক্তি খাড়া করা হয়েছিল৷ এই সব অসত্য ও ভুল যুক্তির বলে যে যুদ্ধ শুরু হয়, তার ফলে ইরাকে হাজার-হাজার মার্কিন, ব্রিটিশ ও অন্যান্য দেশের সৈন্য এবং লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছিল৷ এমনকি, ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য সবচেয়ে বেশি প্রকট হয়ে উঠেছিল সে সময়ই৷

২০০১ সালের সন্ত্রাসী হামলার পর আমেরিকা ও ইউরোপ - এই দুই মহাদেশ যেভাবে একযোগে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল, সেই প্রবণতায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায় ঐ ইরাক যুদ্ধই৷ আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওয়াশিংটন যেভাবে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে গেছে, ইউরোপের মানুষ তা কখনই মেনে নিতে পারে নি৷ এমনকি টোনি ব্লেয়ারের ব্রিটেন, খোসে মারিয়া আসনারের স্পেন সহ কয়েকটি দেশের সরকার বুশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত রাখলেও, সেই সব দেশের জনগণ এই নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে৷

Bildgalerie Barack Obama vor Amtseinführung 17
ওবামার সামনে চ্যালেঞ্জ অনেকছবি: AP

আর শুধু রাজনৈতিক নয় - জলবায়ু পরিবর্তনের মত চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রেও ওয়াশিংটনের অবস্থান হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে৷ বিদায় লগ্নে বুশ অবশ্য বলেছিলেন, যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর কার্যকাল শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি চুক্তি হতে পারে৷

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান সাংসদরা বলেছেন, জর্জ বুশের ইরান নীতিও সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে৷ তাদের কথায়, বুশ যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন তখনকার চেয়ে ইরানী জাতি আরো শক্তিশালী হয়েছে ও পারমাণবিক শক্তি হবার ক্ষেত্রেও আগের চেয়ে বেশি অগ্রসর হয়েছে৷

অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টকে বরণ করে নিতে উৎসবের আনন্দে কাঁপছে গোটা দেশ৷ ঐতিহাসিক মুহূর্তটির জন্য সেখানে রবিবার থেকেই শুরু হয়ে গেছে উৎসব৷ এদিন ঐতিহাসিক লিংকন মেমোরিয়াল টেম্পলের কনসার্টে বক্তৃতা দেওয়ার সময়, আমেরিকার গৃহযুদ্ধ, তিরিশের মহামন্দা আর স্নায়ুযুদ্ধের মতো ইতিহাসের বিভিন্ন ক্রান্তিকালের সঙ্গে তুলনা করে বর্তমানকে একটা কঠিন সময় হিসেবে বর্ণনা করেন ওবামা৷ তুলে ধরেন মানুষের প্রত্যাশার কথাও৷

উল্লেখ্য, বুশের দীর্ঘ আট বছরের শাসনের পর, ওবামা এমন এক সময়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছেন যখন ইরাক আর আফগানিস্তানের যুদ্ধ নিয়ে বেকায়দায় থাকা যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা পাড়ি দিচ্ছে৷ কিন্তু, তারপরও সাধারণ মানুষ আশাবাদী৷ তাদের ধারণা, বুশের জমানা শেষ হওয়ার পর নতুন এক অধ্যায় শুরু হবে যুক্তরাষ্ট্রে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান