বাংলাদেশে নতুন রূপে জঙ্গিবাদ – DW – 15.10.2014
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে নতুন রূপে জঙ্গিবাদ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৫ অক্টোবর ২০১৪

বাংলাদশে জঙ্গিদের তত্‍পরতা নতুন কোনো ঘটনা নয়৷ তবে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে জঙ্গিবাদের নতুন ছক গড়ে ওঠায় বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়ছে৷ ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সঙ্গে এখানকার জঙ্গিরা নতুনভাবে যুক্ত হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1DVy0
Irak Gewalt Ramadi Falluja Islamisten Militanten Al Qaida Al Kaida
ছবি: Reuters

ভারতের জঙ্গিদের সঙ্গেও বাংলাদেশের জঙ্গিদের সম্পর্ক অনেক পাকাপোক্ত৷ তবে বাংলাদেশ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করলেও যুক্তরাষ্ট্রের আইএস-বিরোধী যুদ্ধে জড়াবে না বাংলাদেশ৷

গতমাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশন চলাকালেই বাংলাদেশকে ওবামার আইএস বিরোধী জোটে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়৷ কিন্তু বাংলাদেশ এ সংক্রান্ত বৈঠকে তখন যোগ দেয়নি৷ মঙ্গলবার ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচ মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলমান আইএস বিরোধী যুদ্ধে অংশ নেবে না৷ তবে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সিরিয়া বা ইরাকে কোনো মানবিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হলে তাতে অংশ নিতে বাংলাদেশের আপত্তি নেই৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করেন৷ তিনি বলেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স'৷

বাংলাদেশে এখন ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর তত্‍পরতা স্পষ্ট৷ এরইমধ্যে অন্তত ১৪ জন জঙ্গি ধরা পড়েছে, যারা কোনো-না-কোনোভাবে আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে এবং সিরিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন৷ আর ঢাকায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সামিউন ওরফে ইবনে হামদান বাংলাদেশে আইএস-এর জন্য ‘জিহাদি' রিক্রুট করতে এসেছিল৷ প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে ১০০ জিহাদি সিরিয়ায় পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল তার৷

Bangladesch Aktivist Hizb-ut-Tahrir Dhaka Zusammenstöße Polizei
(ফাইল ফটো)ছবি: Reuters

বাংলাদেশে জঙ্গি তত্‍পরতা প্রতিরোধে গোয়েন্দা বিভাগের একটি জঙ্গিবিরোধী সেল আছে৷ গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বাংলাদেশের জঙ্গিগ্রুপগুলো প্রধানত আল-কায়েদার অনুসারী৷ কিন্তু আল-কায়েদার প্রভাব কমে যাওয়া এবং আইএস-এর তত্‍পরতা দৃশ্যমান হওয়ায় এখানকার জঙ্গিরা এখন আইএসমুখী হচ্ছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে, সিরিয়া এবং ইরাকে আইএস-এর তত্‍পরতা এখানকার জঙ্গিদের উদ্বুদ্ধ করছে৷''

বাংলাদেশি জঙ্গিদের ভারতীয় জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ছে৷ বিশেষ করে বাংলাদেশের জঙ্গি গ্রুপ জেএমবি-র একটি অংশ ভারতেই অবস্থান করছে বলে জানা গেছে৷ সেখানে বসেই তারা বাংলাদেশে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে গোয়েন্দারা জানান৷

ভারতের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণে দুই জেএমবি জঙ্গি নিহত হওয়ার পর ব্যাপারটি সামনে চলে আসে৷ বিস্ফোরণের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ কয়েকজন জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে৷ তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে৷ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল জানান, এ ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য বিনিময় শুরু হয়েছে৷ বাংলাদেশ তথ্য চেয়েছে, আর বাংলাদেশও জেএমবি-র ব্যাপারে সব ধরণের তথ্য দেবে ভারতকে৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷ ওদিকে গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ‘‘বাংলাদেশে চাপের মুখে পড়ে কিছু জেএমবি জঙ্গি ভারতে আশ্রয় নিয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে৷''

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নতুন করে জঙ্গিদের হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রশিদ (অব.)৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘নানা কারণে বিশ্বে জঙ্গি তত্‍পরতার নতুন ম্যাপ তৈরি হচ্ছে৷ আর তার প্রভাব বাংলাদেশি জঙ্গিদের ওপরও পড়ছে৷ তাই বাংলাদেশকে সতর্কভাবেই এগোতে হবে৷''

তিনি মনে করেন, ‘‘এখন জঙ্গি বিরোধী কোনো জোটে বাংলাদেশ যোগ দিলে তাতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নতুন করে হুমকির মুখে পড়তে পারে৷ আমাদের খেয়াল রাখতে হবে এ সব জোটের মূল উদ্দেশ্য কী৷'' ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রশিদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জঙ্গিবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট৷ এ নিয়ে কোনো অস্বচ্ছতা নেই৷ তবে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তথ্য বিনিময়ের ব্যাপারেই বাংলাদেশের মনোযোগী হওয়া উচিত৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান