কেমন আছে যমজ শিশু বন্যা – DW – 14.08.2008
  1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেমন আছে যমজ শিশু বন্যা

হাফসা হোসাইন১৪ আগস্ট ২০০৮

চিকিত্‌সকদের চেষ্টা , বাবা-মার আকুলতা আর সবার দোয়ায় অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে উঠেছে জোড়া থেকে আলাদা করা যমজ শিশু বন্যা৷ কাঁদছে, হাত-পা ছুঁড়ছে, অবুঝ চোখ মেলে বিস্ময়ে তাকাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/Et52
অপারেশনের পূর্বে জমজ বর্ষা-বন্যা, পাশের ছবিটি অপারেশনের সময়কালের (ফাইল ফটো)ছবি: Harun-ur-Rashid Swapan

চিকিত্‌সকরা বলছেন, বন্যার শ্বাস-প্রশ্বাস বেশ স্বাভাবিক৷ কাজ করছে ফুসফুস, কিডনিও৷ কাটাছেঁড়াগুলোতে টান ধরতে শুরু করেছে৷ বন্যার সুস্থ হয়ে ওঠায় আরেক যমজ মেয়ে বর্ষাকে হারানোর শোক কিছুটা কাটিয়ে উঠছেন বাবা গোলাম কিবরিয়া আর মা শাহনাজ বেগম৷ এখন শুধু তাদের চিন্তা, বন্যাকে পুরোপুরি সুস্থ্য করতে যে কয়েক লাখ টাকা প্রয়োজন তার সংস্থান নিয়ে৷ বন্যার চিকিতসায় এগিয়ে আসতে বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধও জানাচ্ছেন বাবা-মা৷

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা গাইবান্ধার রামপুরায় স্কুল শিক্ষক বাবা আর নার্স মায়ের কোলজুড়ে এ বছরের মার্চে জন্ম নিয়েছিলো বুক আর পেট জোড়া লাগা যমজ দুই কন্যা বন্যা আর বর্ষা৷ হাত পা নেড়ে আর নিষ্পাপ হাসিতে ঘর আলো করে রাখতো দুই বোন৷ ফুটফুটে দুই মেয়ের স্বাভাবিক জীবনের আশায় শেষ সম্বল্টুকুও বিক্রি করে বাবা-মা তাদের নিয়ে আসেন ঢাকায় ৷ অবশেষে ৬ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ৬টি বিভাগের চিকিতসক ও নার্সসহ ৫০ জনের একটি দল শুরু করে দুই বোনকে আলাদা করার প্রক্রিয়া৷ নেতৃত্বে ছিলেন... শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম৷ ৭ ঘন্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার৷ আলাদা হওয়ার পর সুস্থ্যও ছিলো সাড়ে তিন মাসের দুই শিশু৷ তবে কিছুক্ষণ পর থেকেই অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে বর্ষার৷আজন্ম বাঁধনে জড়ানো বোন বন্যার কাছ থেকে আলাদা হওয়ার পর মাত্র ৮ ঘন্টার মাথায় পৃথিবী থেকেই চির বিদায় নিলো ফুটফুটে উচ্ছল বর্ষা৷

চিকিত্‌সকরা জানান, অস্ত্রোপচারের পর ধরা পড়ে নতুন নতুন জটিলতা৷ দুই শিশুর পিত্তথলি, পিত্তনালি এমনকি খাদ্যনালিও ছিলো মাত্র একটি করে৷ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভাগাভাগি করে দেয়ার পর হয়তো দুজনকেই বাঁচানো যেতো৷ কিন্তু লিভারসহ মূল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বেশি দুর্বল হয়ে গিয়েছিলো বর্ষার৷

বন্যার চেয়ে তার ওজনও ছিলো কম৷ অস্ত্রোপচারের পর থেকেই ভেন্টিলেটর দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিলো বর্ষাকে৷

জোড়ালাগা যমজ শিশু আলাদা করতে বাংলাদেশে এর আগে এরকম অস্ত্রোপচার হয়েছে আরো তিনটি৷ এর মধ্যে হাসান নামের মাত্র একটি শিশু বেঁচে আছে এখনও৷ তার বয়স সাড়ে ৪ বছর৷